বেইলি রোড ট্রাজেডি: কুলাউড়ায় মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত অ্যাডভোকেট শামীম

প্রকাশিত: ২:১১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২৪
নিহত অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম

বর্তমান খবর,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীমের (৬৫) নামাজে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ইং, মরহুমের প্রথম জানাজা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় কুলাউড়া নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ও পরে দ্বিতীয় জানাজা মরহুমের নিজ গ্রামের বাড়ি উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর জালালিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় রাত ৯টার সময় অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নিহত আতাউর রহমানের মা-বাবার কবরের পাশে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

এতে নামাজের পূর্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম রেনু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসম কামরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ বদরুল হোসেন ইকবাল, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ বদরুজ্জামান সজল প্রমুখ।

এ ছাড়া জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ নওয়াব আলী আব্বাস খান, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মোঃ মোকাব্বির হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার- ২ মোঃ আবু জাফর রাজু, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুর রহমান বাবুল, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মোঃ সিপার উদ্দিন আহমদ, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাও: মোঃ ফজলুল হক খান সাহেদ, কুলাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ, ব্রাহ্মণবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মমদুদ হোসেন-সহ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি ও বিভিন্ন রাজনীতিক দলীয় নেতাকর্মী-সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন জানাজায় অংশ নেন।

জানা যায়, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে।

নিহত শামীমের সাথে থাকা তাঁর নিকট আত্বীয় নূরুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে দুর্ঘটনার কিছু সময় আগে তারা দু’জন একসঙ্গে করে হোটেল ক্যাপিটেল থেকে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে কফি খেতে যান। এসময় ওই রেস্টুরেন্টে অবস্থান নেয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মাথায় রেস্টুরেন্টের নিচের দিকে কালো ধোঁয়াসহ কয়েকটি আওয়াজ শুনতে পান। তখন আতাউর রহমান শামীম উঁকি মেরে ধোঁয়া দেখতে পান। এরপর তারা প্রথমে নিচে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে কিছু না দেখায় সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকেন। এ সময় ভিড়ের মাঝে আতাউর রহমান শামীম নিখোঁজ হয়ে গেলে আর দেখতে পাননি নূরুল আলম। হেলিপ্যাডের মাধ্যমে নূরুল আলম প্রাণে বেঁচে গেলেও অ্যাডভোকেট শামীম অগ্নিদগ্ধে মারা যান। পরে অ্যাডভোকেট শামীমের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন।

আতাউর রহমান শামীমের ভাগনা তারেক হাসান জানান, গত ১ মাস পূর্বে নিহতের স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে দেশে এসেছেন। রবিবার আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাদের।