৫ বছর হাজতবাস করার পর অবশেষে আপন ঠিকানায় ফিরলেন

প্রকাশিত: ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২৪

বর্তমান খবর,চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর কারাভোগ শেষে নিজ ঠিকানায় ফিরেছেন মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নাগরিক অভিষেক (৪০)। গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এবং ভারতের গেদে বন্দরের শুন্য রেখায় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মানসিক ভারসাম্যহীন অভিষেক বাংলাদেশের রাজশাহী কারাগারে বন্দি ছিলেন পাঁচ বছর ধরে। তার বয়স ৪০ বছর। তিনি ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের বরাকাও জেলার গান্ধীনগর থানার জারিদি গ্রামের ঘনশ্যাম প্রসাদের ছেলে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০১৯ সালের ২১শে জুলাই আদালতের মাধ্যমে তাকে রাজশাহী কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরপর ২২ মার্চ ২০২২ সালের সুরক্ষা সেবা বিভাগ বহিরাগমন-১ থেকে ভারত প্রত্যাবাসনের চিঠি প্রেরণ করে। কিন্তু অভিষেকের পারিবারের সন্ধান না পাওয়ায় দায়িত্বশীল কারো কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ চিত্রসাংবাদিক ও অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হুদার প্রত্যাবাসন বিষয়ক বেশ কিছু সাফল্যের কথা জানতে পেরে অভিষেককে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানান। সেই মতে শামসুল হুদা রাজশাহী জেলখানার জেলারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিষেকের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। তারপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে মাত্র ৭২ ঘণ্টায় অভিষেকের মা পুস্পা দেবী ও বোন নিতু দেবীকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হন।

দর্শনা সীমান্তে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চিত্রসাংবাদিক শামসুল হুদা, অভিষেকের মা পুস্পা দেবী, কাকা মুকেশ কুমার সিনহা ও ভাই পংকজ কুমার সিনহা উপস্থিত ছিলেন।

অভিষেকের মা পুস্পা দেবী বলেন, ‘অভিষেক কোচিংয়ে অংক ও জীববিজ্ঞান পড়াতো। এক পর্যায়ে মানসিকভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরই মধ্যে ছেলের শোকে মারা যান অভিষেকের বাবা। দু’দেশের সরকার ও শাসসুল হুদা সাহেবের প্রচেষ্টায় আমার ছেলেকে ফেরত পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

হস্তান্তর অনুষ্ঠানের পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবির দর্শনা কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার মন মোহন, দর্শনা আইসিপি কমান্ডার সুবেদার এনামুল হক, হাবিলদার সাকার উদ্দিন, দর্শনা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুর রহমান, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আতিক, এএসআই মোমিন এবং ভারতের গেঁদে বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার এসি বিতাশা, এস আই পি মুর্খার্জি, এসআই মজুমদার, গেদে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ জেসি দে, কাস্টমস কর্মকর্তা রামাতার পি যাদব, কৃষ্ণগঞ্জ থানার এএসআই তন্ময় দাস, ডিআইবি সাধন মন্ডল, রেডক্রস প্রতিনিধি চিত্তরঞ্জন প্রমুখ।