চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সিসা কারখানার হুমকির মুখে পরিবেশ

প্রকাশিত: ২:০৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪

বর্তমান খবর,চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় হঠাৎ করেই গড়ে উঠেছে ব্যাটারি পুড়িয়ে অবৈধ সিসা তৈরি কারখানা। এই কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর ফেলছে বিরূপ প্রভাব।

উপজেলার দোস্ত গ্রাম ও উক্ত গ্রামের আঞ্চলিক সড়কের পাশে প্রায় মাসখানেক আগে উক্ত গ্রামের এরশাদ নামের এক ব্যক্তির জমি ভাড়া নিয়ে বগুড়া জেলার শাহীন এই সিসা কারখানা গড়ে তুলেছেন। এর আগে এই কারখানা ছিল ঢাকার আশপাশ এলাকায়। প্রশাসনের অভিযানে ওই এলাকায় টিকতে না পেরে প্রত্যন্ত এই এলাকায় ঘাটি গেড়েছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানার ভিতর প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করছেন। কেউ ব্যাটারি ভাঙছেন, কেউবা আবার ভাঙা ব্যাটারির প্লেট এক জাগায় স্তুপ করছেন। এসব প্লেট গভীর রাতে আগুনে পুড়িয়ে সিসা তৈর করা হবে। এই কারখানায় কাজ করা শ্রমিক বগুড়া, গাইবান্ধা ও নওগাঁ জেলার বাসিন্দা।

কারখানায় কাজ করা গাইবান্ধার লতিফ বলেন, বগুড়ার শাহীন এই কারখানার মালিক।মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে এখানে এসেছি। মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ করি। বিভিন্ন জেলা থেকে পুরানো ব্যাটারি সংগ্রহ করে এখানে এনে পুড়িয়ে সিসা বের করি। সিসার ক্ষতিকারক পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্মন্ধে আমার জানা নেই। তবে এর আগে যেখানে ছিলাম সেখানে প্রশাসনের লোকজন অভিযান দিয়ে কারখানা গুড়িয়ে দিয়েছিলেন।চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবারই প্রথম কারখানা করেছি, এর আগে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর, সাভারের আমীন বাজার,ফরিদপুর ও রাজবাড়ী এলাকায় ছিলাম। বিভিন্ন দফতর ম্যানেজ করেই আমরা কারখানা চালাই।

স্থানীয় মনু মিয়া বলেন, আমাদের মাঠে টিন আর চাটাই এর বেড়া দিয়ে ওরা কি যেন করে।সারাদিন এখানে ট্রাক আসে যায়,প্রতিদিন গভীর রাতে প্রচুর আগুন জ্বলতে দেখি। তখন কেমন জানি ঝাঝালো গন্ধ আসে।

লিয়াকত বলেন, ওই মাঠেই আমার চাষ। এরা প্রায় একমাস আগে এখানে এসে ব্যাটারি ভাঙার কাজ শুরু করেছে। রাতে আগুনও জ্বালায়। যখন আগুন জ্বালায় তখন চোখ মুখ জ্বলে। মাঠের গাছ গুলোর পাতা দিনদিনে লাল হয়ে যাচ্ছে।

চিকিৎসাকদের ভাষ্যমতে,ব্যাটারির বর্জ্য পুড়িয়ে সিসা তৈরি করলে তা আশপাশে থাকা মানুষের শরীরে পয়জনিং (রক্তকণিকা ও মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতি করা) সৃষ্টি করে। এর ফলে মানসিক বিকৃতি, রক্তশূন্যতা ও মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন হতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু জানতে পেরেছি এই কারখানার বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।