কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তৈরী হচ্ছে দক্ষ জনশক্তি

প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২৩

বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো: জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে পারলে তারাই হবে দেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। প্রতিটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রতিবছর শত শত বেকার যুবক-যুবতী কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বিদেশ যাচ্ছে। স্বাবলম্বী হচ্ছে তারা দেশে-বিদেশে। এরই মধ্যে গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি জিতে নিয়েছে দেশ সেরা প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার। তবে প্রশিক্ষক-কর্মচারী সংকটে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাগণ।

গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালে। প্রতিষ্ঠার সাত বছরে ১৯টি ট্রেডে এপর্যন্ত কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়েছে প্রায় ২২ হাজার বেকার যুব। এর মধ্যে সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করে বিদেশ গেছে ১০ হাজারের বেশি নারী ও পুরুষ। ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বেকার যুব প্রশিক্ষণ নিতে আসে। বিনামূল্যে এবং কিছু ক্ষেত্রে সামান্য খরচে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে খুশি প্রশিক্ষণার্থীগণ।

বেকার যুবদের মধ্যে কেউ ওয়েলডিং, কেউ ইলেকট্রনিক্স, বিদেশি ভাষা, কেউ আবার ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আবার অনেক মেয়েরা সারিবদ্ধভাবে সেলাইয়ের কাজ শিখছে। সুমি বেগম নামে এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন. প্রশিক্ষণ নিয়ে সবাই যে বিদেশ যাচ্ছে এমনটা না। অনেকেই উদ্যোক্তা হচ্ছে। তাদের মাধ্যমে এলাকায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। শাফায়াত হোসেন আনন্দ বলেন, ড্রাইভিং শিখে একজন প্রফেশনাল ড্রাইভার হবো। সুযোগ পেলে বিদেশে যাবো। মুরাদ আহমেদ গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ড্রাইভিং কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে হংকংয়ে কর্মরত রয়েছে। টিটিসি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাবলম্বী হয়েছে।

গাইবান্ধা কারিগরি কেন্দ্র সুত্রে জানা যায়, ভাষা শিক্ষা, এসইআইপি, ভোকেশনাল এসএসসি, মোটর ড্রাইভিং, ইলেকট্রনিক্স, ক¤িপউটার, গার্মেন্টস, আরএসিসহ ১৯টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। কোর্সগুলোর মধ্যে জাপানি ভাষা, হংকংয়ের ভাষা অন্যতম। ৩ মাস, ৪ মাস ও ৬ মাস মেয়াদী কোর্সে ক¤িপউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। হাউসকিপিংয়ের ওপর তিন মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে বিদেশে যাওয়ার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়। বিদেশে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের থাকা-খাওয়া স¤পূর্ণ ফ্রি।

বিদেশে যেতে হলে একজন প্রশিক্ষিত কর্মীর জন্য সরকারি হিসেবে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার কাজ করে যাচ্ছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এর মধ্যে গাইবান্ধা টিটিসি দেশ সেরা হয়েছে কয়েকটি ট্রেডে। মডেল টিটিসি করার আশা করা হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের কারণে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে বিদেশ যাওয়ার জন্য ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা সরকারি খরচ দিতে হয়। কেউ টাকা সংগ্রহে ব্যর্থ হলে প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করা প্রয়োজন।