স্পোর্স ডেস্ক || অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কানপুরে অনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে খেলেই অবসরে যাবেন তিনি। এ সময় সাকিব আরও জানান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই ছিল এ সংস্করণে তার শেষ ম্যাচ। তবে ওয়ানডে খেলে যাবেন। পাকিস্তানে হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে থেকে অবসরে যাবেন সাকিব।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে অবসরের কথা জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি। মিরপুর টেস্টে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) খেলতে পারলে সেটি হবে আমার শেষ টেস্ট।’
আগামী মাসে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে ঢাকায় আসার কথা দক্ষিণ আফ্রিকার। সময়সূচি নির্ধারিত না হলেও অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা এই সিরিজ। ফলে ঘরের মাঠ থেকে অবসরে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এ পোস্টারবয়।
সাকিবের ঘোষণা অনুযায়ী এরই মধ্যে জাতীয় দলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে আফগানিস্তানের বিপক্ষের ম্যাচটি ছিল তার শেষ ম্যাচ। যদিও শেষ ম্যাচের পারফরম্যান্স ভুলে যেতে চাইবেন তিনি। সে ম্যাচে প্রথম বলে আউট হওয়ার পর বল হাতে ১৯ রানে ছিলেন উইকেটশূন্য।
২০০৬ সালে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেশের ইতিহাসের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সে ম্যাচে সাক্ষী হয়েছিলেন সাকিব। অভিষেক ম্যাচেই ব্যাট হাতে ২৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নেন ১ উইকেট। এরপর অংশগ্রহণ করেন টানা ৯টি বিশ্বকাপে। রোহিত শর্মার সঙ্গে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এ পর্যন্ত আয়োজিত সব বিশ্বকাপের অংশগ্রহণ করা দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সাকিবকে পড়তে হয়েছে নিরাপত্তাহীনতায়। হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় শঙ্কা জেগেছে, দেশে ফিরলে হতে পারেন গ্রেপ্তার। চট্টগ্রামে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু সাকিব, শেষটা করতে চান মিরপুরে। কানপুরে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বলেছেন, ‘যেটা মনে হয়েছে, সামনের হোম সিরিজ আমার শেষ সিরিজ হবে। এভাবে ফারুক ভাই (বিসিবি সভাপতি) ও নির্বাচকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। মিরপুর টেস্ট (অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) হবে আমার শেষ টেস্ট। বিশেষ করে টেস্টে।’
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেননি সাকিব। সে সময় কানাডায় টি-টোয়েন্টি লিগ খেলছিলেন তিনি। সেখান থেকে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে খেলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট। সতীর্থরা দেশে ফিরলেও তিনি যান ইংল্যান্ডে। সেখানে থেকে দলের সঙ্গে যোগ দেন ভারতে। চেন্নাইয়ের পর এবার কানপুরে টেস্ট খেলার অপেক্ষায় সাকিব। সংসদ সদস্য হওয়ায় সরকার পতনের পর হন হত্যা মামলার আসামি। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকায় জরিমানা হয় ৫০ লাখ টাকা।
নিরাপত্তার বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘বোর্ড চেষ্টা করছে এটা কীভাবে সুন্দর করে আয়োজন করতে পারে। দেশে যাতে নিরাপদে খেলতে পারি। দেশ থেকে যেন নিরাপদে বেরও হতে পারি।’ নিরাপত্তার আশ্বাস পেলে দেশে ফিরবেন, আর তা না হলে কানপুর টেস্টই হবে সাদা পোশাকের শেষ ম্যাচ, ‘কানপুর টেস্টের পর দেশের মাটিতে লাল বলে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি দেখছেন।
সাকিব বলেন, এ নিয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক ভাইয়ের (বিসিবি সভাপতি) সঙ্গে কথা হয়েছে। যদি দেশে আসার পরিস্থিতি আমার জন্য অনুকূলে থাকে আমি দেশে এসে সিরিজ খেলে বিদায় নিতে চাই। না হয় হয়তো এই কানপুরেই শেষ।