বর্তমান খবর,নিজস্ব প্রতিবেদক: বনশ্রী’র বনশ্রী টাওয়ারে অবস্থিত বদিউল আলমের মালিকানাধীন মাল্টি প্লান হোলডিংস লিঃ দক্ষিন আনন্দ নগর,আফতাব নগর, সি -ব্লক সংলগ্ন স্বপ্নের ঠিকানা আবাসিক প্রকল্প, মাত্র ৪ফিট পায়ে চলার রাস্তায় ৫কাঠার প্লটে নির্মান করছেন ১২তলা ভবন যেখানে রাজউক এর নেই কোন প্রকার অনুমোদন।
অথচ,অনুমোদনহীন ভবন দ্রুতই নির্মাণ করতে আশ্রয় কৌশলের। রাজউক ভবনটিতে চলমান কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে না পারে এ উদ্দেশ্য বদিউল আলম হাইকোর্টে রীট করেন। রীটের বদৌলতে রাজউকের নিষেধাজ্ঞা আরোপ থেকে সময়িক বিরতি নিয়ে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ১২তম তলার ছাদ ঢালাই শেষ করে সাথে সাথে বিক্রয় করছে ফ্ল্যাট।
অনুমোদনহীন নির্মিত ভবনে সাধারন মানুষের নিকট ফ্ল্যাট বিক্রয় করে করছে প্রতারনা। সম্প্রতি,বাড্ডা মৌজার দক্ষিণ আনন্দনগর আনসারক্যাম্প পানির পাম্প এর পেছনে ৩৭ নং ওয়ার্ড ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর সি এস ১৫২১ খাস জমি এবং তারপাশে আরও দুটি দাগ মিলিয়ে যার নম্বর- ১৫১৯-১৫২০ একসাথে মাল্টিপ্লান হোল্ডিং লিঃ এর স্বত্বাধীকারী বদিউল আলম,বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গত নভেম্বর ২০২২ ইং মাসে রাজউক অফিসে জমা দিয়েছেন। উক্ত সি এস ১৫২১ দাগের জমি সিটি জরিপে সরকারী খাস জমি হিসেবে রেকর্ড করা হয়। উক্ত জমির মালিক জাহাঙ্গীর আলম গং। বর্তমানে বদিউল আলম সি এস ১৫২১ দাগের ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে পাশের দুটি সি এস দাগ ১৫১৯-১৫২০ সহ ভবন নির্মাণের প্ল্যান তৈরী করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়,বদিউল আলম রাজউকের মহাখালী আঞ্চলিক অফিসের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী নুর আলম ও প্রকৌশলী বুলবুল এর মাধ্যমে ৩০ লক্ষ টাকা চুক্তির বিনিময়ে দক্ষিণ আনন্দ নগরের স্বপ্নের ঠিকানা প্রকল্পটির ভুয়া প্লান প্রদান করেন যার সার্বিক সহায়তা করেন অত্র এলাকার ততকালীন দায়িত্বে থাকা ইমারত পরিদর্শক আব্দুর রহমান।
অনুসন্ধানে জানতে পারা যায় রাজউকের মহাখালী আঞ্চলিক অফিসের তৎকালীন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কালা জাহাঙ্গীর ওরফে বুল ডগ,ইমারত পরিদর্শক আব্দুর রহমান কে নিয়ে অভিযুক্ত ভবনের সাইট পরিদর্শন করে বদিউলের সহিত প্রাথমিক চুক্তি করে তৎকালীন প্রকৌশলী নূর আলম এর সাথে প্রকৌশলী বুলবুল এর মাধ্যমে নগদ ৩০ লক্ষ টাকা চুক্তিতে একখানা প্ল্যান অনুমোদন কমিটির স্বাক্ষর জাল করে ৬তালার ভূয়া প্ল্যান তৈরী করে দেয় যেহেতু রাস্তা না থাকায় অনুমোদন কমিটির সম্মতি না থাকায়। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলেও কিছু করার উপায় না পেয়ে ওই প্ল্যান অনুযায়ী কাজ শুরু করে মাল্টি প্লান হোল্ডিং সেট-ব্যাক পরিবর্তন করে পূর্ণ ডেভিয়েশন এর সাথে।
অভিযোগের বিষয়ে অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী নুর আলম ও প্রকৌশলী বুলবুল এর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি তবে অভিযুক্ত ইমারত পরিদর্শক আব্দুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
গত ২৪ আগস্ট অভিযুক্ত বদিউল আলমের হাইকোর্টে রীটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অথরাইজড অফিসার ইমরুল হাসান বর্তমান খবরকে বলেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ফাইল আইন শাখায় পাঠানো হয়েছে। এখন আইন শাখার মতামত পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
বদিউল আলমের অবৈধ্য ভবনের বিষয়ে জানতে রাজউকের ১৩০২/২৩ ফাইলের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে বর্তমান খবর মুখোমুখি হয় রাজউকের আইন কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল করিম এর। আইন কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল করিম অতিশয় আন্তরিকতার সাথে গুরুত্ব দিয়ে অনেক সময় ব্যায় করে ১৩০২/২৩ ফাইলের সন্ধান পান । ১৩০২/২৩ ফাইল বর্তমানে রাজউকের আইনজীবি মোঃ কামরুল ইসলামের কাছে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে । আইন কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল করিম এড মোঃ কামরুল ইসলামকে বলেন ১৩০২/২৩ ফাইলের তথ্যর বিষয়ে বর্তমান খবরকে সহযোগিতা করতে । এড মোঃ কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বর্তমান খবরকে বলেন আমি সবেমাত্র নিয়োগ পেয়েছি-এখনও ১৩০২/২৩ ফাইল হতে পাইনি।
রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দেয়া সহ বিভিন্ন পত্রিকায় মাল্টি প্লান হোল্ডিংস লিমিটেড এর আনন্দ নগরের সুখের ঠিকানা প্রকল্পের অনিয়ম সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেও রাজউকের আইন শাখায় মাসের পর মাস ফাইল পরে থাকায় প্রশ্নবিদ্ধ করে সাধারণ মানুষের মনে। এবিষয়ে নগর বিশারদ গণ অভিমত ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন।
অভিযোগের উপর অভিযোগ থাকা সত্বেও রাজউক এর ফাইল বন্দি করে নিশ্চুপ থাকা দূর্নীতি পরায়ন ভূমি মালিক দের প্ল্যান বিহীন ভবন নির্মাণে উৎসাহিত করবে।