চীনা ভাষা শিক্ষায় যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট
বর্তমান খবর,খোন্দকার এরফান আলী বিপ্লব : বিদ্যা শিক্ষা করতে গিয়ে যদি সুদূর চীন দেশে যেতে হয় তবে সেথায় গিয়ে তা শিক্ষা কর।আর হ্যাঁ- শিক্ষা-দীক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশীদের কাছে আগ্ৰহের একটি দেশ হয়ে উঠেছে চীন। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি শুধু উচ্চ শিক্ষা গ্ৰহণের জন্য এ দেশ থেকে প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী পাড়ি জমাচ্ছে চীনে। কেননা,দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্ৰহণের আকাঙ্ক্ষা চিরন্তন এবং কম-বেশি সবারই থাকে। কিন্তু ভাষাগত জ্ঞান ও দক্ষতা না থাকায় অনেকের পক্ষেই সে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয় না। আর সেই স্বপ্ন পূরণে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছে রাজধানীর স্বনামধন্য চাইনিজ ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট”।
চীনা ভাষায়(চীনা অক্ষরের মধ্যে নৈতিক প্রণোদনা অনুসন্ধান) বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী ড.মোহাম্মদ সাদী’র সুদক্ষ নেতৃত্ব ও পরিচালনায় দেশি-বিদেশি একঝাঁক মেধাবী শিক্ষকের সমন্বয়ে শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত “ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট যোগাযোগমূলক চীনা ভাষা কোর্স থেকে শুরু করে HSK-5 লেভেল পর্যন্ত নানা কোর্স পরিচালনা করে আসছে।
এখান থেকে সাফল্যের সাথে চীনা ভাষায় প্রশিক্ষণ গ্ৰহণ করে প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী চীনে মেডিকেল,প্রকৌশল,কৃষি,অর্থনীতিসহ নানা বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে স্ব স্ব ক্ষেত্রে রেখে চলেছে কৃতিত্বের স্বাক্ষর। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য,যোগাযোগ ও দোভাষী হিসেবে কাজ করতে আগ্ৰহীরাও চীনা ভাষার কোর্স করে সাফল্য অর্জন করেছেন।
সম্প্রতি ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় আধুনিক প্রযুক্তি ও সূযোগ সুবিধা সম্পন্ন বেশ কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে চাইনিজ ভাষার ক্লাশ করছেন। তাদের মধ্যে রংপুরের মেয়ে জহুরা মোস্তফা হীরা। তিনি ২০২৪সালে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করেছেন এবং ২০২৫ সালে চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান। প্রস্তুতি স্বরূপ তিনি চীনা ভাষার HSK কোর্সটি করতে চান। সেজন্য ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউটকে বেছে নিয়েছেন।
তিনি বলেন,”প্রথম দিকে আমি ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট এর ভিডিওগুলো ইউটিউবে দেখেছিলাম। তাদের উচ্চারণ,রাইটিং স্কিলগুলো খুবই সুন্দর। তারা বাংলা ভাষার মাধ্যমে চাইনিজ ভাষা সুন্দরভাবে বোঝায়। এই কারণে আমি ইদাই-ইলুকে সিলেক্ট করেছি। তাছাড়া তাদের শিক্ষক ড.মোহাম্মদ সাদী অনলাইন ও অফলাইনে ক্লাশ করান। এই স্যারের অনেকগুলো ভিডিও দেখেছি ইউটিউবে।
আমি স্যারের ভিডিও দেখে কিছু কিছু চাইনিজ শব্দ শিখেছি এবং বর্তমানে অফলাইনে এই স্যারের কাছেই আমি চাইনিজ ভাষা শিখি। কারণ আমার মনে হয়েছে যে,এই একটি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে যারা অফলাইনে হাতে-কলমে সুন্দরভাবে চাইনিজ ভাষা শিখায়। সেজন্য আমি এই প্রতিষ্ঠানটিকে বেছে নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন,তিনি চাইনিজ কালচার ও চাইনিজ মানুষের নীতি নৈতিকতাকে পছন্দ করেন। তিনি চীনে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হতে চান। জহুরার মতো আরো অনেকেই আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউটে।
২০২৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করেছেন আরেক শিক্ষার্থী আরজু আক্তার। তিনি বর্তমানে ইদাই-ইলুর একজন শিক্ষার্থী। তিনি বলেন,”আমি চেয়েছিলাম চায়নার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে। আমি জানতে পেরেছিলাম চায়নার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক নামকরা ও অনেক এগিয়ে। আমার কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়ার খুব ইচ্ছে।
কেননা,চায়নার প্রযুক্তি খুবই উন্নত ও পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম। ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট পছন্দ করার কারণ হচ্ছে এখানে চাইনিজ ভাষা শিক্ষার সব রকমের সুবিধা রয়েছে। এখানকার শিক্ষকগণ আন্তরিকতার সাথে ভালোভাবে শেখাচ্ছেন।
আপনি কিভাবে চাইনিজ লিখতে পারেন,কিভাবে চাইনিজ বলতে পারেন ও উচ্চারণে যত ধরণের সমস্যা থাকে তাঁরা সব সমাধানের চেষ্টা করেন। আরেকটি ভালো দিক হচ্ছে তাঁরা শিক্ষার্থীদেরকে চাইনিজ ভাষা শিক্ষার বই ও ডিকশনারি প্রদান করে থাকে। শিক্ষার চমৎকার অসাধারণ পরিবেশ ও শিক্ষকদের সহযোগিতাপূর্ণ উদার মনোভাবের কারণেই আমি ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট পছন্দ করেছি চাইনিজ ভাষা শেখার জন্য।
বর্তমানে এখানে আমি পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চাইনিজ ভাষা শিখছি। আমি বলবো যে,চাইনিজ ভাষাকে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন ভাষা হিসেবে ধরা হয়। তবে এখানে যেভাবে শেখানো হচ্ছে তাতে মনে হয়েছে খুব সহজ। এখন আমি খুব ভালোভাবে চাইনিজ ভাষা বলতে পারছি,লিখতে পারছি। এখন আমি প্রস্তুতি নিয়েছি HSK পরীক্ষা দেয়ার জন্য। আমার এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ড.মোহাম্মদ সাদী স্যারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতার কারণে।
শুধু আরজু আক্তারই নন,এখানে ভর্তি হয়েছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এমরান হোসেন। তিনি HSK-3 লেভেলে আছেন। চাকুরি করছেন বরগুনা পাওয়ার প্লান্টে। তিনি জানান,চাইনিজদের সাথে কাজ করে তাদের কাজের প্রসেসগুলো ভালো লেগেছে। সেখান থেকেই চাইনিজ ভাষা শেখার প্রতি তাঁর আগ্ৰহ সৃষ্টি হয়। এখান থেকে কোর্স শেষ করে কোন চাইনিজ কোম্পানিতে তিনি চাকরি করতে চান।
এছাড়াও ভবিষ্যতে চায়নাতে তাঁর এমএসসি করার ইচ্ছে রয়েছে। তিনি তাঁর পরিচিতি বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট সম্পর্কে জানতে পারেন। এখানে ভর্তির পর প্রথমদিকে চাইনিজ ভাষা কঠিন মনে হলেও এখন খুব সাবলীল মনে হয় তাঁর।
এমরান হোসেনের মতো মোঃ আউয়াল হোসেন নামে আরেকজন পেশাজীবীও ভর্তি হয়েছেন এখানে। তিনি ট্যাক্স বার এ্যাসোসিয়েশন-এ মুহুরী হিসেবে কাজ করেন। এখানে HSK-3 শেষ করে এখন HSK-4 লেভেলের কোর্সটি শুরু করেছেন। এখানকার মনোরম পরিবেশ ও বন্ধুত্বসুলভ শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাতে-কলমে পাঠদান পদ্ধতিতে তিনি খুবই সন্তুষ্ট। এখান থেকে চাইনিজ ভাষা শিখে তিনি দোভাষী হিসেবে কাজ করতে চান।
ইদাই-ইলুর আরেকজন শিক্ষার্থী ফারজানা সুমাইয়া। তিনি প্রায় একবছর হলো এখানে চাইনিজ ভাষা শিখছেন। বরিশাল বিএম কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী ফারজানার ভবিষ্যত পরিকল্পনা চায়নাতে স্কলার্শীপ নিয়ে পড়তে যাওয়া। সেজন্যই তাঁর এখানে ভর্তি হওয়া। যেন চায়না গিয়ে চাইনিজদের সাথে যোগাযোগ, ফ্রেন্ডশিপ ও চায়না সংস্কৃতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া যায়। তিনি বরাবরই ছিলেন চাইনিজ সংস্কৃতির প্রতি দূর্বল। চাইনিজ ড্রামা দেখার পর তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর আগ্ৰহ বেড়ে যায়। ফলে তিনি চাইনিজ ভাষা শেখার পাশাপাশি চাইনিজ গানও শিখছেন। তিনি মিষ্টি কন্ঠে একটি চাইনিজ গান গেয়ে শোনান।গানটির বাংলা কথামালা হচ্ছে ঃ
“আমি তোমার জন্য এক কাপ উঞ্চ চা প্রস্তুত করবো
অন্ধকার ঘনিয়ে আসার আগেই তুমি বাড়ি ফিরে যাবে
সময় প্রমাণ করবে আমি তোমাকে কত ভালোবাসি ….
আমার কোমল ব্যবহার সব তোমার জন্য।”
তাঁর মতে এখানে চাইনিজ ভাষা শেখার পাশাপাশি গানসহ চাইনিজ সংস্কৃতিরও চর্চা করা হয়। যা প্রতিষ্ঠানটির একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। এ সবকিছুর জন্যই তিনি অধ্যক্ষ ড.মোহাম্মদ সাদীকে সাধুবাদ জানান।
আরো কথা হয় ইদাই-ইলুর প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তার ইতি’র সাথে। খুলনা অঞ্চলের মেয়ে ইতি একসময় এখানকার শিক্ষার্থী হলেও এখন একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিজেই চাইনিজ ভাষা শেখাচ্ছেন। পাশাপাশি একটি কর্পোরেট গার্মেন্টস বায়িং হাউজে চাকরি করছেন।
তাঁর মতে,চাইনিজ ভাষা শিখে কেউ না খেয়ে আছে এমন কোন নজির নেই। আমাদের এখানে আমরা যারা বাঙালি আছি চাইনিজদের সাথে একটা কম্বিনেশন রেখে কাজ করতে পারছি। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এখানে আমি তার প্রমাণ।
আমার বক্তব্য হলো যে,আমরা যারা চাইনিজ ভাষা শিখছি আমরা আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি। ওদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি। একইসাথে চাইনিজরাও ওদের মনোভাব প্রকাশ করতে পারছে। কারণ ওদের ভাষাটা আমি জানি। আমি যেখানে চাকরি করছি মানে আমার সেক্টরে অনেক কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। অনেক দোভাষী নিয়োগ হচ্ছে। আমি চাইবো যারা আমাদের এই গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করতে ইচ্ছুক তারা ভালোভাবে চাইনিজ ভাষা শিখে আসবেন।
চাইনিজ ভাষা জানা থাকলে অনেক সুবিধা আছে। আমি যতটুকু জানি ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট থেকে চাইনিজ ভাষা শিখে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র ছাত্রী সবাই নিজ নিজ সেক্টরে ভালো আছেন। সেজন্য ইদাই-ইলুর প্রতি সবসময় ভালোবাসা থাকবে।
ইতির মতো ইদাই-ইলুকে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ জানিয়ে কথা বলেন পুরান ঢাকার পর্যটন ব্যবসায়ী মোঃ আল-আলীফ। তিনি আলিফ আখলাক ট্যুরস এ্যাড ট্রাভেলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি দোভাষী হিসেবে চাইনিজদের সাথে কাজ ও ব্যবসা পরিচালনা করতে চান। সেজন্য চাইনিজ ভাষা শিখতে অন্যদের মতো তিনিও ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউটকে বেছে নিয়েছেন।
অন্য একটি ইনস্টিটিউট থেকে দুই বছর চাইনিজ ভাষা শিখেও নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পুনরায় ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট-এ চাইনিজ ভাষা শিখেছেন লিমা আফরোজ। তিনি এখন এখানকার শিক্ষক ও এডমিন অফিসার। অত্যন্ত সুনামের সাথে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
তিনি বলেন, “ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউটে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি হবার পর শুধু পড়ালেখা নয়,আরো অনেকগুলো বিষয়ের উপর আমরা জোর দিয়ে থাকি। যেমন চাইনিজ কালচার,চাইনিজ গান,নৃত্য,ড্রামা প্রভৃতি। যাতে চায়নাতে গেলে কারো কোন সমস্যা না হয়। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে আমরা একটু বেশি কেয়ার নেয়ার চেষ্টা করি।
আমাদের এখানে হোস্টেলের ব্যবস্থাও আছে যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ছেলে-মেয়েরা এসে নিরাপদে লেখাপড়া করতে পারে। আমরা যে গাইডলাইনে শিক্ষার্থীদের পড়াই তাতে খুব সহজেই যেকোনো বয়সী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে চাইনিজ ভাষা শিখতে পারেন এবং নিজের জীবন গঠন করতে পারেন।
সবশেষে কথা হয় ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ড.মোহাম্মদ সাদী’র সাথে। তিনি বলেন,”আমি চাইনিজ ভাষা বিষয়ে চায়নার দক্ষিণ -পশ্চিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে এসে ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি।
শুরুতে এই প্রতিষ্ঠানের নাম ছিলো ‘চাইনিজ একাডেমি বাংলাদেশ’। শুরুটা ছিলো ২০১৬ সাল। সেই থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে আজকে আমাদের নয় বছর পূর্ণ হয়েছে। প্রতি বছর আমরা প্রায় এক হাজারের মতো শিক্ষার্থীদের চাইনিজ ভাষা পড়াই। সে হিসেবে এই নয় বছরে প্রায় নয় হাজার শিক্ষার্থীকে আমরা চাইনিজ ভাষা পড়িয়েছি। এদের মধ্যে ব্যাপক সংখ্যক বাংলাদেশে দোভাষী হিসেবে কাজ করছে,কেউ কেউ ব্যবসা করছে,চাকরি করছে,আবার কেউ কেউ চীনে পড়তে গিয়েছে।
তারা অনার্স,মাস্টার্স কম্পিলিট করেছে,কেউ পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেছে। তাদের কেউ বাংলাদেশে ফিরে এসে চাইনিজ কোম্পানিতে ভালো চাকরিও করছে। বাংলাদেশে চাইনিজ প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে প্রায় সবগুলো সেক্টরে আমাদের স্টুডেন্ট আছে। এদেশে চাইনিজ ভাষা শেখানোর জন্য ব্যক্তি ও সরকারি পর্যায়ে অনেক প্রতিষ্ঠান থাকলেও বেশিরভাগই অপেশাদার। সেখানে পার্টটাইম চাইনিজ ভাষা শেখানো হয়। কিন্তু আমরা ব্যতিক্রম। আমারা ফুল টাইম স্কুল।
যেমন একটা সাধারণ স্কুল সকালে শুরু হয় এবং বিকেলে বা রাতে শেষ হয় আমরা ঠিক তেমনি। আমরা প্রতিদিন ক্লাস নিয়ে থাকি। ফলে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশী একজন ছাত্র দোভাষী হিসেবে তৈরি হয়ে যায়। এজন্যই আমাদের পড়ানোটা ফুল পেশাদার। যদি কেউ সত্যি সত্যি খুব অল্প সময়ের মধ্যে দোভাষী হিসেবে তৈরি হতে চায় তবে তাকে অবশ্যই আমাদের কাছে আসতে হবে। কারণ আমরাই একমাত্র পেশাদার প্রতিষ্ঠান।
আমরা ২০২৩ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে অনুমোদন লাভ করেছি। আমরা এখন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিলেবাস ও একইসাথে চীনের HSK সিলেবাস অনুসরণ করছি। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি,বিদেশে শ্রম শক্তি রপ্তানি ও জাতীয় উন্নয়নে আমরা অগ্ৰণী ভূমিকা রাখছি। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা অনুষ্ঠান ও দিবস পালনের পাশাপাশি চীনা নববর্ষ,শরৎ উৎসব,বসন্ত উৎসব প্রভৃতি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে থাকি।
নিয়মিতভাবে আমরা চায়না ভাষা শেখার বই,অভিধান,প্রসপেক্টাস,ক্যালেন্ডার প্রভৃতি প্রকাশ করে আসছি। স্বীকৃতি স্বরূপ নানা পুরস্কারও অর্জন করেছি”। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ধাপে ধাপে অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে উন্নীতকরণ এবং চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা স্থাপন করা। সেইসাথে বাংলাদেশে একটি চাইনিজ ভাষা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
চীনা ভাষা শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান “ইদাই-ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট” ভাষা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি চীন দেশে পড়তে যেতে ও ভ্রমণে সহায়তা,দেশে-বিদেশে চীন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও কর্মসংস্থানে সহায়তা,চীন দেশ সম্পর্কিত ব্যবসায় পরামর্শ প্রদান,চীন-বাংলা দোভাষী ও ট্যুর গাইড সহায়তা,ডকুমেন্ট ও সাহিত্য অনুবাদ,মুভি অনুবাদ,চীন দেশ ও চীনা ভাষা বিষয়ক গ্ৰন্থ প্রকাশসহ সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও জনকল্যাণমূলক নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে ইতিমধ্যেই একটি মাইলফলক হয়ে উঠেছে। এরপরও এ প্রতিষ্ঠানটির নেই নিজস্ব ক্যাম্পাসও জমি। ফলে সরকারি ও দাতা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি হয়ে পড়েছে।