এবি ব্যাংকের শামীমা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট বানাতে দৌড়ঝাঁপ

প্রকাশিত: ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২৪
এবি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার শামীম আক্তার

বর্তমান খবর,বিশেষ প্রতিনিধি: গত ২৯ নভেম্বর “এবি ব্যাংকে প্রিন্সিপাল অফিসার শামীমার অবৈধ নিয়োগ বৈধের কর্মযজ্ঞ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসেছেন বাংলাদেশ ব্যাংক ও এবি ব্যাংক। ইতোমধ্যে এবি ব্যাংকের সকল কর্মকর্তাকে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মুল সার্টিফিকেট বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এবি ব্যাংক শামীমা আক্তারকে নিয়োগ ও জাল সার্টিফিকেট সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা প্রদানও করতে বলেছেন।

এদিকে গত নভেম্বর মাসে পরীক্ষার প্রবেশপত্র,পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বা উত্তীর্ণের কোন প্রমাণ ছাড়াই নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নাছিমা আক্তার (আইডি নং-৩৮৮২) এবি ব্যাংকের শামীমা আক্তারকে ৩য় শ্রেণিতে পাশ দেখিয়ে একটি সাময়িক সনদপত্র দিয়েছেন। এটা দিয়ে শামীমা আক্তার ঢাকার বংশাল থানায় জিডি করেছেন। এখন জিডি ও সাময়িক সনদপত্র দিয়ে শামীমা আক্তার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর বোর্ডে একদল প্রতারক চক্রের সাথে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট বানাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

জানা যায়,ভুয়া স্নাতকের সার্টিফিকেট ও ঘুষ বাণিজ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এবি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার বনে যান শামীম আক্তার। বর্তমানে তিনি ঢাকার নবাবপুর রোড শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার (টেলার) হিসেবে কর্মরত আছেন এবং এমপ্লয়ি আইডি নং-৩২৬৬৪।

শামীমা আক্তারের রয়েছে Shamima Sharmin নামে ৩টি ফেসবুক আইডি। ফেসবুক আইডি ৩টিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উল্লেখ রয়েছে- (১) Joggonnath University Dhaka, (২) National University dhaka এবং (৩) National University of Singapore.

জুনিয়র অফিসার হিসেবে এবি ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়ার সময় শামীমা আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতার ডিগ্রি (স্নাতকের) মূল সার্টিফিকেট ছিল জাল। অথচ কোন যাচাই-বাছাই ছাড়া ব্যাংকের কিছু অসাধু হর্তাকর্তারা ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে শামীমা আক্তারকে নিয়োগ দেন। এরপরে নানা সময়ে ব্যাংকের ওপর মহলকে বশ করে হাতিয়ে নিয়েছেন পদোন্নতি, হয়েছেন প্রিন্সিপাল অফিসার এবং মাসিক ৮৬ হাজার টাকা বেতন পান।

নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ ১৯৯২-১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রীতে ভর্তি হন শামীমা আক্তার। কিন্তু ডিগ্রি (স্নাতক) সম্পন্ন করেননি শামীম আক্তার। কলেজ ও শামীমার কাছে ডিগ্রি ফাইনাল ইয়ার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নেই কোন প্রবেশপত্র ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণের প্রমাণাদি। অথচ শামীমা নিয়োগের সময় ডিগ্রীর (স্নাতক) যে সার্টিফিকেট ব্যাংকে জমা দেন, সেখানে দেখানো তিনি ১৯৯৪ সালে ডিগ্রি পাশ করেছেন। শামীমা আক্তারের ডিগ্রি (স্নাতক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও উত্তীর্ণের কোন প্রমাণ কলেজ, ব্যাংক ও তার নিজের কাছে নেই।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা শামীমা আক্তারের ব্যক্তিগত ফাইল থেকে তার জাল সার্টিফিকেট সরিয়ে ফেলেন। এবং শামীমার চাকরি বাঁচাতে শামীমা আক্তার সহ ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনলাইন ভেরিফিকেশন ছাড়া ২০০০ সালের আগে ডিগ্রি (স্নাতক) পাশের সার্টিফিকেট বানাতে গাজীপুর বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময় চুক্তি চলমান রেখেছেন।