বর্তমান খবর,ডেস্ক নিউজ ।। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংকিং খাতে অহরহ দুর্নীতি হয়েছে। ভুয়া সার্টিফিকেট ও ঘুষ বাণিজ্যে এবি ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংকে অবৈধ নিয়োগ হাতিয়ে নিয়েছেন অনেকে। ভুয়া স্নাতকের সার্টিফিকেট ও ঘুষ বাণিজ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত এমন একজন হলেন এবি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার বনে যাওয়া শামীম আক্তার। বর্তমানে তিনি ঢাকার নবাবপুর রোড শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার (টেলার) হিসেবে কর্মরত আছেন এবং এমপ্লয়ি আইডি নং-৩২৬৬৪।
শামীমা আক্তারের রয়েছে Shamima Sharmin নামে ৩টি ফেসবুক আইডি। ফেসবুক আইডি ৩টিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উল্লেখ রয়েছে-
(১) Joggonnath University Dhaka.
(২) National University dhaka,
(৩) National University of Singapore.
জানা গেছে, দেড় যুগ আগে জুনিয়র অফিসার হিসেবে এবি ব্যাংকে নিয়োগ পান শামীমা আক্তার। নিয়োগের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার ডিগ্রি (স্নাতকের) মুল সার্টিফিকেট ছিল জাল। অথচ কোন যাচাই-বাছাই ছাড়া আওয়ামী লীগের হর্তাকর্তারা ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে শামীমা আক্তারকে নিয়োগ দেন। এরপরে নানা সময়ে ব্যাংকের ওপর মহলকে বশ করে হাতিয়ে নিয়েছেন পদোন্নতি,হয়েছেন প্রিন্সিপাল অফিসার এবং মাসিক ৮৬ হাজার টাকা বেতন পান।
দীর্ঘ দেড় যুগ শামীমা আক্তারের স্বামীর সাথে তার ছিল না কোন যোগাযোগ। চলতি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সুইডেনে ব্রেইন স্ট্রোকে মারা যান শামীমা আক্তারের স্বামী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা শামীমা আক্তারের ব্যক্তিগত ফাইল থেকে তার জাল সার্টিফিকেট সরিয়ে ফেলেন। এবং শামীমার চাকরি বাঁচাতে ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনলাইন ভেরিফিকেশন ছাড়া ২০০০ সালের আগে ডিগ্রি (স্নাতক)পাশের সার্টিফিকেট বানাতে গাজীপুর বোর্ড সহ শামীমা আক্তারের ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়া নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজে তদবির ও ঘুষ বাণিজ্য শুরু করছেন।
গত নভেম্বর মাসে পরীক্ষার প্রবেশপত্র,পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বা উত্তীর্ণের কোন প্রমাণ ছাড়াই নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে শামীমা আক্তার ৩য় শ্রেণিতে পাশ একটি সাময়িক সনদপত্র সংগ্রহ করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ ১৯৯২-১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রীতে ভর্তি হন শামীমা আক্তার। কিন্তু ডিগ্রি (স্নাতক) সম্পন্ন করেননি শামীম আক্তার। কলেজ ও শামীমার কাছে ডিগ্রি ফাইনাল ইয়ার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নেই কোন প্রবেশপত্র। অথচ শামীমা নিয়োগের সময় ডিগ্রীর (স্নাতক) যে সার্টিফিকেট ব্যাংকে জমা দেন, সেখানে দেখানো তিনি ১৯৯৪ সালে ডিগ্রি পাশ করেছেন। অথচ শামীমা আক্তার ডিগ্রি (স্নাতক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও উত্তীর্ণের কোন প্রমাণ কলেজ ও ব্যাংকের কাছে নেই। তাহলে কিভাবে দীর্ঘদিন এবি ব্যাংকের ক্যাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে প্রিন্সিপাল অফিসার বনে গিয়েছেন তিনি।
তৎকালীন সময়ে শামীমা আক্তারের দেওয়া ডিগ্রি (স্নাতক) ভুয়া সার্টিফিকেট ইতোমধ্যে ব্যাংকের শামীমা আক্তারের ব্যক্তিগত ফাইল থেকে সরিয়ে ফেলানো হয়েছে। ২০০০ সালের আগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সার্টিফিকেটের কোন অনলাইন ভেরিফিকেশন না থাকায় গাজীপুর বোর্ড থেকে সার্টিফিকেট বানাতে অবৈধ তোড়জোড় চালাচ্ছে শামীমা আক্তার ও ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।
এবি ব্যাংকে অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার একটা মাফিয়া চক্র শামীমা আক্তারের অবৈধ নিয়োগকে বৈধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। শামীমা আক্তার নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজের সাময়িক সনদপত্রের জোরে শামীমা আক্তার ইতোমধ্যে প্রবেশপত্র হারানোর সাধারণ ডায়েরি করেছেন ঢাকার বংশাল থানায়। এখন শুধু গাজীপুর বোর্ডকে বশ করতে পারলেই শামীমা আক্তার ডিগ্রির বৈধ সনদ পেয়ে যাবেন। যার হবে না কোন অনলাইন ভেরিফিকেশন। এমনটাই জানা গেছে,শামীমা আক্তারের অবৈধ নিয়োগকে বৈধ করার চক্র কাছ থেকে।