বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো ।। কালের প্রবাহে হারিয়ে যাওয়া দেশি জাতের মাছ চাষ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে রংপুরে মাছ চাষিরা। বিলুপ্তপ্রায় দেশি কৈ, শিঙ, মাগুর, টেংরা,পাবদা, খুলসা জাতীয় মাছ চাষে বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বেশি ঘরে তুলেছেন চাষিরা। পানি স্বাদু হওয়ায় রংপুর অঞ্চলের নদী-নদী, খাল বিলে একসময় ২ শতাধিক প্রজাতির মাছের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। কালের বিবর্তনে জলবায়ুর পরির্বতন ও পরিবেশগত কারণে কিছু কিছু প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছিল। হারিয়ে যাওয়া এসব মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করছে মৎস্য বিভাগ।
রংপুর মৎস বিভাগ সূত্রে জানা যায়,রংপুর বিভাগে গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন দেশি প্রজাতির এসব মাছ উৎপাদন হয়েছে। এসব মাছ উৎপাদনের সাথে জড়িত রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মৎস চাষি। প্রতি কেজি মাছ ৩০০ টাকা করে হিসেবে সাড়ে ১০ হাজার মেটিক টন মাছে চাষিদের ঘরে এসেছে ৩০০ কোটি টাকার বেশি। এসব মাছ চাষিরা নিজ উদ্যোগে পুকুর এবং বিভিন্ন জলাশয়ে চাষ করছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, তিন বছরে বিলুপ্ত প্রায় এসব মাছের উৎপাদন বড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। মৎস্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, মাছের ঘাটতি পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রংপুর বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে তোলা হয়েছে মাছের জন্য একাধিক অভয়াশ্রম। বিশেষ করে দেশি মাছ চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আগামী দু এক বছরের মধ্যে রংপুর অঞ্চলে মাছের ঘাটতি থাকবে না। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের সৃষ্টি পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রকৃতিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় জলাশয়গুলোতে পড়েছে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব।
টিলা,কালা বাটা,ঘোড়া,পুটি,বোল,চিতল,গজার,রিটা,বট শিং,ঘাউড়া,সালবাইম,কাচকি,ফলি,শিল বাইলা ইত্যাদি দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যেতে বসলেও বর্তমানে বিলুপ্তের পথে অনেক মাছই পাওয়া যাচ্ছে। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মৎস্য চাষি বকুল বলেন, তিনি অন্যান্য মাছ চাষের পাশাপাশি বিলুপ্ত প্রায় দেশি মাছ চাষ করে অর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তার দেখাদেশি অনেকেই বিলুপ্ত মাছ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
রংপুর মৎস্য অধিদপ্তররের অতিরিক্ত পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন,এই অঞ্চলে মাছের ঘাটতি পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে দেশি কৈ, পাবদা, টেংরা, শিং, মাগুর ইত্যাদি মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারিভাবে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে এই অঞ্চলে দেশি মাছ চাষ করে চাষিরা ৩০০ কোটি টাকা আয় করেছেন।