ভয়াবহ বন্যায় পাশে নেই কোন পাহাড়ি সংগঠন, পাহাড়িদের চোখে মুখে হতাশা

প্রকাশিত: ৭:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪
খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম তাদের জন্য সাহায্যে হাত বাড়ান

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা || সামগ্র খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা মাটিরাঙ্গা, রামগড়, পানছড়ি, মহালছড়ি ও সদর উপজেলা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসময় জেলার অন্তত শতাধিক গ্রামের ৩ লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। গত ২২ বছরের মধ্যে এমন বন্যা কেউ দেখেনি। খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড়ি সংগঠন রয়েছে প্রায় ১০টির মতো। জেএসএস, ইউপিডিএফ, সংস্কার, গণতান্ত্রিক, ত্রিপুরা সংগঠন, মারমা সংগঠনসহ প্রায় ১০ টির মতো পাহাড়ি সংগঠন রয়েছে। হতভাগা এ পাহড়িদের বন্যায় উদ্বাস্তু হয়ে খিদে ও বস্ত্রহীন হয়ে পানিবন্দী হয়ে বসবাসের সময় কিছু সরকারি ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তা ছাড়া স্বজাতি কর্তৃক কোন সহায়তা ও সহানুভূতি মিলেনি। দীঘিনালায় কয়েকটি উপজাতি পরিবার তিনদিন কোন খাদ্য পানীয় দুটোই মিলেনি তাদের অভাগা কপালে।

খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম তাদের জন্য সাহায্যে হাত বাড়ান

খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম তাদের জন্য সাহায্যে হাত বাড়ান


জানা যায় তাদের খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম তাদের জন্য সাহায্যে হাত বাড়ান। তখন তাদের মুখে স্বস্তি ফিরে আসে। এখন প্রশ্ন হলো যে পরিবারগুলোকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় তাদের স্বার্থের কাজে ব্যবহার করে থাকে বিপদের সময় তাদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি তারা। এটির দ্বারা বুঝা যাচ্ছে পাহাড়ি সংগঠনগুলো তাদের স্বার্থে উপজাতিদের ব্যবহার করে থাকে।

খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম তাদের জন্য সাহায্যে হাত বাড়ান

খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম তাদের জন্য সাহায্যে হাত বাড়ান


রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, নানিয়ারচর ও অনেক উপজেলায় প্রায় শতাধিক গ্রাম পানি বন্দী হয়ে পড়ে, কাপ্তাই বাঁধ খোলে দিয়ে ও তার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পানি নেমেই চলছে, কাপ্তাই বাঁধের ১৬ টি গেইট বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। তখন থেকেই১৬ গেইট খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। পানিবন্দী এ সব এলাকায় বাঙ্গালী ও পাহাড়িদের বিভিন্ন ত্রাণ সহাযতা দিতে দেখা যায নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বাঙালি কিছু সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। লংগদুর উত্তর ইয়ারাংছড়িতে বেশ কিছু পাহাড়ি উপজাতি বন্যায় উদ্বাস্তু হয়ে পড়লে অসহায় অবস্থা দেখে তাদের মাঝে ত্রাণ নিয়ে ছুটে যায় মাইনী জোনের জোন কমান্ডারসহ সৈনিকরা। পাশাপাশি বায়তুশ শরফ প্রাক্তন ছাত্র সংসদ, সেচ্ছাসেবী সংগঠন ছায়ানীড়, পার্বত্য ছাত্র সংসদসহ কয়েকটি বাঙ্গালী সংগঠন তাদের ত্রাণ সহায়তা করেন। কিন্তু পাহাড়ি বেশ কটি সংগঠন সেখানে সক্রিয়ভাবে রয়েছে তারা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদাবাজী করেন দীঘিনালা থেকে। তারা তাদের স্বজাতিদের কোন সহায়তা প্রদান করেনি।

একটি উপজাতি পরিবারকে জিজ্ঞেস করা হলো, জেএসএস, ইউপিডিএফ ও অন্য সংগঠন এবং প্রভাবশালী স্বজাতিদের অনেক টাকা-পয়সা তারা কেন তাদের কোন খাবার ও ত্রাণ দেয়নি? উত্তরে পরিবারটি বলেন, দাদা আমরা তাদের কাছে খবর পাঠানো সাহস ও করিনি কারণ তারা হিংস্র। ত্রাণ তো দূরের কথা কিছু চাওয়ার বিনিময়ে তাদের উল্টো দিতে হয়। গতবার বন্যায় আমাদের বাড়িঘর তলিয়ে গেলে তাদের কাছে আশ্রয় চাইলে তারা আমার তিনটি বড় বড় শুকর নিয়ে যায়। যা আমার শেষ সম্বল ছিল। তাই এবার তাদেরকে ভয়ে কোন খবর দেয়নি। তাদের দিতে হয় তারা নিতে জানে দিতে জানেনা।

রাঙ্গামাটি সদরসহ বেশ কিছু স্থানে পাহাড় ধসেছে সেখানেও কোন পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনকে সহায়তা করতে দেখা যায়নি। বান্দরবানের আলীকদম পোয়ামুরি, থানছি অনেক স্থানে ভারি বর্ষনের ফলে বন্যা হয়েছে, পাহাড় ধসে যাতায়াত রাস্তাবন্ধ হয়েছে সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সহায়তা ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি। পাহাড়ি উপজাতি বিভিন্ন নেতাদের তখন খুঁজে পাওয়া যায়না।

এলিন বম নামে এক গাড়ি চালক বলেন, রাস্তার পাহাড় ধসে পড়ার কারণে গাড়ী চলছেনা। তাই দুদিন কোন গাড়ি চালাতে পারিনাই ঘরে কোন খাবার নেই বাচ্চারা উপোস রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতা রাস্তার মাটি পরিস্কার করার কারনে আজ গাড়ি চালাতে পারছি। এখন বাজার করে বাড়ি গেলে সবাই খাবো। দু’দিন রাস্তা বন্দী হয়ে আছি কোন বম নেতা আমাদের কোন খুঁজ খবর নেন নি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী না হলে আমরা এখনো যাতায়াত করতে পারতাম না।