শামুকখোল পাখির ডানায় ভর করেছে শুভ্র শরৎ
শামুকখোল পাখির ডানায় ভর করেছে শুভ্র শরৎ
বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো: প্রকৃতিতে শরতের শুভ্রতা ছড়াচ্ছে শামুকখোল পাখি। এই পাখিটি এখন আগের মত চোখে না পড়লেও কখনো কখনো দেশের বিভিন্নস্থানে দেখা পাওয়া যায়। এটি ভিন দেশ থেকে আসা পরিযায়ী পাখি নয়। দেশীয় পাখির পর্যায়ে পড়ে এই পাখি। যেখানে যায় সেখানেই এরা অপার সৌন্দর্য মেলে ধরে।
পাখিটি সম্পর্কে জানা যায়, শামুকখোল আকারে বড় জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৮১ সেন্টিমিটার হতে পারে। ডানা ৪০ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ১৫.৫ সেন্টিমিটার, লেজ ২০ সেন্টিমিটার ও পা ১৪.৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রজননকালে প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ একদম সাদা দেখায়। কাঁধ-ঢাকনি, ডানার প্রান্ত-পালক, মধ্য পালক ও লেজ সবুজাভ কালো। লম্বা ভারি ঠোঁট কালচে-লাল থেকে সবজে-শিঙ রঙের। দু’ঠোঁটের মাঝখানে অনেকটা ফাঁকা জায়গা থাকে। নিচের ঠোঁট মাঝখানে বেশি বাঁকা হয়ে উপরের ঠোঁটের ডগার সাথে মিলে এ ফাঁকের সৃষ্টি হয়েছে। শামুক-ঝিঁনুক ধরার সুবিধার্থে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
চোখ সাদা, ধূসর বা হলদে-বাদামি। চোখের চারদিকের চামড়া পালকহীন। পা লম্বা ও পায়ের পাতা অনুজ্জ্বল মেটে রঙের। প্রজনন মৌসুম ছাড়াও প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ ধূসরাভ সাদা এবং পা অনুজ্জ্বল পাটকিলে বর্ণ ধারণ করে। পুরুষ ও স্ত্রী পাখির চেহারা একই রকম, কোন যৌন দ্বিরূপতা নেই। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ ধোঁয়াটে-বাদামি। কাঁধ ঢাকনি কালচে বাদামি। পা অনুজ্জ্বল এবং দু’ঠোঁটের মাঝখানের ফাঁক কম বা অনুপস্থিত। একেবারে ছোট ছানার ঠোঁটে কোন ফাঁক থাকে না।
রংপুর নগরীর অদূরে নব্দীগঞ্জ এলাকা থেকে এই পাখির ছবি ক্যামরা বন্দি করা হয়েছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়য়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন,শামুকখোল হাওর, বিল, মিঠাপানির জলা, হ্রদ, ধানক্ষেত, উপক‚লীয় প্যারাবন ও নদীর পাড়ে বিচরণ করে। সচরাচর ছোট ঝাঁকে থাকে।
বড় কলোনিতে রাত কাটায় ও প্রজনন করে। খাবারের অভাব না হলে এরা সাধারণত এক জায়গা থেকে নড়ে না। কমবয়সী শামুকখোলেরা উড়তে শেখার পর বিশাল অঞ্চল পরিভ্রমণ করতে পারে। এরা বিশেষ কৌশলে ধীরে ধীরে চক্রাকারে আকাশের উঁচুতে উঠে যায় আর দল বেঁধে ঘুরতে পছন্দ করে। এটি পরিযায়ী পাখি নয়।