নির্বাচনে যে টাকা খরচ হয়েছে সেটা আমি তুলব – সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবুল কালাম
বর্তমান খবর,লালপুর(নাটোর)প্রতিনিধি : স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবুল কালাম আজাদের দেওয়া বক্তব্যের একটি ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে গত নির্বাচনে করা খরচের টাকা তুলে নেওয়া হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন,‘পাঁচটা বছরের (২০১৪-১৮) এমপি হিসাবে নেওয়া বেতন-ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না। আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে) এক কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব,আর কোনো অন্যায় কাজ করব না।’ তাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আগের ভোটের সময় এক টাকাও খরচ হয়নি আমার। শুধু ব্যাংকে ২৫ লাখ টাকা জমা রাখতে হয়, ওটা রেখেছি। এক টাকাও খরচ নেই, ২৫ লাখ টাকাই তুললাম। ট্যাক্স ফ্রি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছিলাম। এক কোটি টাকা দিয়েও কিনতে পারতাম। আমার যখন টাকা নাই তখন ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। এবার আমি কিনব, ওই টাকা দিয়ে কিনব। ওই যে টাকা, ওই টাকা তুলে নিব আমি। খালি এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলব।
মঙ্গলবার লালপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ-সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার বক্তব্য খণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। আমি এটা বলেছি যে, ‘আগের নির্বাচনে আমার তেমন কোনো টাকা খরচ হয়নি। তবে এবারের নির্বাচনে আমার এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তাই বলে আমি কি ওই টাকা নেব? না নেব না। নির্বাচনের আগে অসুস্থ হয়ে আমি ঠিকমতো নির্বাচনি কাজ করতে পারিনি, তবু আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আল্লাহ আমার জীবন বোনাস দিয়েছেন। তাই আমি সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে আপনাদের জন্য কাজ করে, আপনাদের সেবা করে প্রয়োজনে নিঃস্ব হয়ে ফিরে যাব। কিন্তু আমার বক্তব্য মাঝে মাঝে বাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খণ্ডিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। আমি খরচের টাকা তুলব এমন কথা বলিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্যে (সংসদ-সদস্য) উনি বলেছেন, এটাতে আমার কোনো কথা নেই।’নাটোর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ (অব.) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ-সদস্যের এমন বক্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। একজন সংসদ-সদস্যের কাছে দেশের মানুষ আরও গঠনমূলক বক্তব্য প্রত্যাশা করেন।