বর্তমান খবর,জামালপুর প্রতিনিধি: জন্মের পর থেকে দুটি হাত না থাকলেও জীবন সংগ্রামে হেরে যায়নি সিমাম। তার অদম্য ইচ্ছা পূরণে পা দিয়ে লিখে চলমান এসএসসি পরীক্ষা অংশ নিয়েছে সিয়াম। মনে বিন্দুমাত্র নেই কোনো হতাশা। হতে চায় সে সরকারি বড় কোনো কর্মকর্তা,করতে চান মানব সেবা। তাই উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যেতে সবার সহযোগিতাও কামনা করেছেন সিয়াম ও তার পরিবার।
জানা গেছে,সিয়াম জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর দম্পতি জিন্না মিয়া ও জোসনা বেগমের সন্তান। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে সিয়াম ছোট হলেও জন্ম থেকেই নেই তার দুটি হাত। থেমে নেই কিন্তু তার পড়ালেখা ও খেলাধুলা। পরিবারের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রাথমিকের মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়ালেখা। বিদ্যালয় থেকে বেতন মওকুফ করলে পড়ালেখা পুনরায় শুরু করে সিয়াম। ২০১৮ সালে ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে একই ইউনিয়নের চাপারকোনা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয় সে।
সিয়ামের শিক্ষক ও চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জানান, সিয়াম আমাদের এখানে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। এর পর থেকেই সে আমাদের সার্বিক সহযোগিতায় অভাব, দারিদ্র্য ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দুই হাত নেই তার বাম পা দিয়ে লিখে স্থানীয় মুজিবুর রহমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চলমান এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সবার সহযোগিতা পেলে সে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
দুই হাত না থাকলেও সিয়ামের লেখাপড়া ও কাজ কর্মে কোনো সমস্যা হয় না। সে পা দিয়ে লিখতে লিখতে তার অভ্যাস হয়ে গেছে। সে সব কাজ নিজেই করতে পারে। সিয়ামের পরিবারের গরিব হওয়ায় শারিরীক প্রতিবন্ধতাকে জয় করে লেখাপড়া করে বড় হয়ে মানব সেবাসহ সে বাবা-মায়ের দুঃখ গোচাতে চায়। তাই সমাজের বিত্তবান ও সরকারের সহযোগীতা পেলে তার আশা পূরণে শেষ পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে যাবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।