বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো: গরু, ছাগল, হাঁস মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণীর রোগ নির্ণয়ে রংপুর বিভাগের ৫ জেলার মানুষের ভরসা গাইবান্ধা আঞ্চলিক প্রাণি রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণাগার। তবে জনবলের অভাবে ভোগান্তিতে পড়ছে সেবা প্রত্যাশীরা।
গবেষণাগারটিতে বিভিন্ন পদে ১১ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও মাত্র একজন এমএলএসএস দিয়ে চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ গোটা অফিসের কার্যক্রম। কেরানি থেকে বিজ্ঞানী, সব কাজ একাই করছেন এমএলএসএস মো. আকতার হোসেন।
গাইবান্ধা আঞ্চলিক প্রাণি রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণাগারের এমএলএসএস মো. আকতার হোসেন একাই কখনও ল্যাবে রক্ত পরীক্ষা করছেন, কখনও মলমুত্র আবার কখনও বসছেন রোগ নিয়ে গবেষণায়। ময়না তদন্তসহ অফিসের দাপ্তরিক সব কাজ করছেন তিনি। চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী না হলেও জনবল না থাকায় এমএলএসএস হয়েও একাই করছেন চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও অফিসের সকল কর্মকর্তার কাজ।
গাইবান্ধা আঞ্চলিক প্রাণি রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণাগারের এমএলএসএস মো. আকতার হোসেন বলেন,প্রায় তিন বছর থেকে অফিসটি জনবল শূন্য হয়েছে। কর্মকর্তাদের কাজ দেখে শিখে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এসব কাজ করছি। প্রতিদিন ৫ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু পাখির বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে মানুষ আসেন এখানে, বাধ্য হয়েই তাদের এভাবে সেবা দিতে হচ্ছে।
একজন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, একজন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ৫ জন টেকনিশিয়ান, একজন হিসাবরক্ষক,সুইপার, এমএলএসএসসহ ১১ জনের পদ থাকলেও একজন এমএলএসএস ছাড়া নেই কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী। গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় বিকল্প কোন সরকারি প্রাণি রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণাগার না থাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ল্যাবের দামি যন্ত্রপাতি।
খামারিগণ বলেন,সব কিছু থাকার পরও জনবলের অভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে খামারিরা এসে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বেসরকারি বিভিন্ন ল্যাবে ও অতিরিক্ত টাকা খরচে অন্যত্র যেতে হচ্ছে। গাইবান্ধা জেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহফুজার রহমান বলেন, গাইবান্ধাসহ উত্তরের জেলাগুলোতে গরু, ছাগল, হাঁস মুরগি,পাখিসহ বিভিন্ন পশু পাখির খামার বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন বাড়ছে প্রাণি রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণাগারটির ওপর নির্ভরশীলতা।
স্থানীয়ভাবে রোগ নির্ণয় না করতে পারায় বাধ্য হয়ে জয়পুরহাট থেকে করাতে হচ্ছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। এতে ব্যয় যেমন বাড়ছে, সঙ্গে খামারিদের হয়রানি হতে হচ্ছে। গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার প্রাণি রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণার জন্য ১৯৮১ সালে আঞ্চলিক কার্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি জনবল শূন্য হয়ে পড়ে।