বর্তমান খবর,চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : দাম্পত্য জীবনে রয়েছে তিনটি কন্যা সন্তান। আবার কন্যা সন্তান প্রসব করলে তালাক দেবেন স্বামী! কিন্তু এবারও জন্ম হয়েছে কন্যা সন্তানের। তাই তালাকের ভয়ে হাসপাতালেই নবজাতককে রেখে পালিয়ে গেছেন মা ও স্বজনরা। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের রেজিস্ট্রার থেকে জানা গেছে, প্রসব বেদনা উঠলে সকাল ৭ টা ৪৩ মিনিটে আলমডাঙ্গা উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া খাতুনকে সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগেরই কন্যা সন্তান প্রসব করেন পাপিয়া। পরে তাকে ভর্তি করা হয় গাইনী ওয়ার্ডে। কিছুক্ষণ পর কন্যা সন্তানকে আলমডাঙ্গা উপজেলার ছত্রপাড়া গ্রামের বিলকিস বানু নামে এক নারীর কাছে রেখে পালিয়ে যান আলমগীর-পাপিয়া দম্পতি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়। ভিড় বাড়তে থাকে উৎসুক মানুষের।
খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী। পরে নবজাতকটি সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মালেকা খাতুনের তত্বাবধায়নে রাখা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা ওই নবজাতকের নামকরণ করেন ‘পুষ্প’।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ওই দম্পতির তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এটি তার চতুর্থ ডেলিভারি। এবারও কন্যা সন্তান হলে স্বামী তালাক দেবে বলে জানায় পাপিয়া। তাই কন্যা সন্তান জন্ম নেওয়ায় তাকে ফেলে পালিয়ে যায় ওই দম্পতি। আপাতত হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মালেকা খাতুনের তত্বাবধায়নে রয়েছে নবজাতকটি।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, ওই দম্পতি হাসপাতালে যে নাম ও ঠিকানা দিয়েছেন তা যাচাই করা হয়েছে। তারা ভুল তথ্য দিয়েছেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও ছবি দেখে ওই নারী ও তার স্বজনদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, নবজাতকটি বর্তমানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্বাবধায়নে রয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।