বর্তমান খবর,কেশবপুর(যশোর)প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুরের অলিতে গলিতে গজিয়ে ওঠা প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার নামে চলছে প্রতারনা। পথে বসিয়ে দিচ্ছে দূর দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারন মানুষের । এ সকল ক্লিনিক গুলোতে কোন প্রকার নিয়মনীতির বালাই নেই। অনিয়মকেই নিয়ম হিসেবে চালিয়ে দিয়ে ক্লিনিকের মালিকরা অল্প দিনেই কোটিপতি বনে যাচ্ছেন।
জানা গেছে,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নিয়ে ও লাইসেন্স বিহীনভাবে কেশবপুরের অলিতে গলিতে গড়ে ওঠেছে ৮ টি প্রাইভেট ক্লিনিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকি না থাকায় একই লাইসেন্স নবায়ন না করে বছরের পর বছর অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে,প্রভাবশালী সিন্ডিকেট,জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও বিএমএর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এবং ডাক্তারদের কারণে এসব প্রাইভেট ক্লিনিক তাদের অবৈধ ব্যবসা চলিয়ে যাচ্ছে। কোন অঘটন ঘটলেই ওই সিন্ডিকেটের মধ্যস্থতায় তা ধামাচাপা দেওয় হয়। ফলে এ পর্যন্ত কোন ঘটনাই স্থানীয়ভাবে অভিযোগ বা মামলা পর্যন্ত গড়াতে পারছে না। ১/২ টি ঘটনা লোক দেখানো তদন্ত কমিটি করা হলেও সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে চলে নানা রকম তালবাহানা। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ৮০ শতাংশ ক্লিনিকে নেই। সাধারন মানুষ বলছেন, কেশবপুরের অধিকাংশ প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর বেশির ভাগই কসাইখানা। বেশির ভাগ ক্লিনিকই চলছে দালালের মাধ্যমে।
সরেজমিনে জানা গেছে,ক্রিষ্টাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতাল, কেশবপুর মডার্ন হাসপাতাল,কপোতাক্ষ সার্জিকাল ক্লিনিক,মহাকবি মাইকেল ক্লিনিক,হোসেন ক্লিনিক এন্ড প্যাথলজি,কেশবপুর সার্জিকাল ক্লিনিক,হেলথ কেয়ায় হসপিটাল লিমিটেড,মার্তৃমঙ্গল ক্লিনিক নামে ৮ টি প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। এসকল ক্লিনিকগুলো বিভিন্ন রকম চটুকারদের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রোগিদের আকৃষ্ট করে আসছে।
অভিযোগ আছে,সর্বরোগের চিকিৎসা প্রদানকারী এসকল ক্লিনিকগুলোতে একজন রোগি চিকিৎসা সেবা নিতে আসলেই তার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ৫/৬ টি পরীক্ষা। কিন্তু ২/৩ টি ক্লিনিকবাদে কোন ক্লিনিকেই সার্টিফিকেট বা ডিপ্লোমাধারী টেকনিশিয়ান না থাকায় প্রায়ই ভূল রিপোর্টের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় অসহায় রোগিদের। তাছাড়া ইতিপূর্বে একই রিপোর্ট বিভিন্ন ক্লিনিকে আলাদা আলাদা হওয়ার ঘটনাও এ সকল ক্লিনিকে ঘটেছে।
তথ্যসুত্রে জানা গেছে, ক্লিনিকের মালিকেরা বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে বেশ কিছু দালাল নিয়োগ দিয়েছেন। এসব দালালদের কাজ হচ্ছে গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন ভূয়া ডাক্তারদের নগত টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তাদের মাধ্যমে ক্লিনিকগুলোতে রোগি ভর্তি করানো। রোগি ক্লিনিকে আনার বাবদে এ সকল ভূয়া ডাক্তাররা বাড়ি বসেই তাদের নির্ধারিত একটি অংশ পেয়ে থাকেন।
কেশবপুরের নাগরিক সমাজের আহবায়ক আবু বক্কার সিদ্দিকী বলেন,কেশবপুরের অনেক ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনে রোগি মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই ঘটে। অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা সিজারিয়ান অপারেশন করাতে হবে এবং সিভিল সার্জন অফিসের একটি টিম সার্বক্ষনিক মনিটরিং করলে স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়বে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে অনেক সমস্যা ছিলো। আমি নিয়মিত তদারকি করছি। এখন অনেকটা স্বচ্ছভাবে এসব ক্লিনিকগুলো সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে চলেছে। তারপরো কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। কোন অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না।