মা জানে না মাহিন বেঁচে নেই

প্রকাশিত: ১১:০২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
নিহত মুবতাছিন রহমান মাহিন

বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো ।। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিকনিকে যাওয়ার পথে সকালে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে ছেলে। সকাল থেকে দুপুর,দুপুর গড়িয়ে বিকাল,প্রতিবেশি-স্বজনেরা মৃত্যুর খবর জানলেও মা জানেন ছেলে আহত হয়েছে। ছেলের মরদেহ আসা পর্যন্ত যেন মায়ের কানে মৃত্যুর সংবাদ না পৌঁছায় সে জন্য স্বজনেরা চালাচ্ছেন জোর প্রচেষ্টা।

প্রতিবেশী ও অন্য কাউকে বাড়ির আশেপাশে ভিড়তে দিচ্ছে না তাঁরা। ২৩ নভেম্বর শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) পিকনিকের দোতলা বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে রয়েছে মুবতাছিন রহমান মাহিন।

রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়ায় তাঁর বাড়ি। মাহিনের বাবা ইমতিয়াজুর রহমান এবি ব্যাংকের সৈয়দপুর শাখার ব্যবস্থাপক। দুই ভাইয়ের মধ্যে মাহিন বড়। মা-বাবা ও পরিবারের খুব আদরের ছিল মাহিন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালি গ্রামে তাঁকে বহন করা বিআরটিসির দোতল বাসটি পৌঁছালে ঝুলে থাকা তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে মাহিনসহ আইইউটির তিন শিক্ষার্থী মারা যান।

এ ঘটনায় আহত হন আরও তিন জন। বিকালে মাহিনের বাড়িতে যাওয়ার পথে পুরো এলাকা থমথমে দেখা যায়। মোড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবেশিরা তাঁর মৃত্যুর খবর নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে বাড়ির আশেপাশে কাউকে দেখা যায়নি।

মুবতাছিন রহমান মাহিনের চাচা হাসান রহমান বলেন, আইইউটি ইউনিভার্সিটিতে ক্যারিয়ার অ্যান্ড বিজনেস সোসাইটিতে শেষ বর্ষের ছাত্র মাহিন। সকালে সে বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে পুড়ে মারা গেছে। মাহিনের বাবা ঢাকার পথে রওনা দিয়েছে। বিষয়টি এখনও তাঁর মাকে জানানো হয়নি। ছেলের মৃত্যুর খরব তাঁর মা সহ্য করতে পারবে না। এ জন্য বাড়ির আশেপাশে কাউকে আসতে দেওয়া হচ্ছে না।

মুবতাছিন রহমানের চাচা হাসান রহমান বলেন, আমার বাবা (মাহিন) গেছে ওখানে (আইইউটি) ভালো কিছু করে আসবে। তাঁর কোনো ক্ষতি কল্পনাতেই আসে না। তাকে ফিরতে হবে লাশ হয়ে এর মতো দুঃখজনক কিছু হতেই পারে না। যারা দায়িত্বে ছিল তাদের শতভাগ অবহেলা ছিল। একটা তার ঝুলে পড়বে গায়ের মধ্যে এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই, কার অবহেলার কারণে আমাদের সন্তানকে হারাতে হলো। ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু প্রসঙ্গে আইইউটির প্রো-ভিসি দুর্ঘটনা তো আর বলে-কয়ে আসে না।