বর্তমান খবর,মোংলা(বাগেরহাট)প্রতিনিধিঃ : নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মোংলা বন্দরকে বিশ্বমানের নিরাপদ ও আধুনিক সমুদ্রবন্দরে পরিণত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আজ মঙ্গলবার মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান।
মোংলা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোংলা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অর্থনীতিতেও বন্দরটি ব্যাপক অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। আর বন্দরটির সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দরকে আরো আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের বার্ষিক সক্ষমতা বাড়বে। চ্যানেলে ৮ দশমিক ৫ সিডি গভীরতা অর্জিত হবে। এতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দরে হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। মোংলা বন্দরে বছরে প্রায় ৮ লাখ টিইউ কন্টেইনার, ৪ কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা হবে।
এ সময়ে বন্দরের কার্যক্রমকে আরো বেশি গতিশীল ও আমদানি-রফতানিকারকদের উৎসাহিত করতে রাজস্ব বিভাগকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরে স্ক্যানার স্থাপনের নির্দেশনা প্রদান করেন উপদেষ্টা।
বন্দরের নাব্যতা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে উলে¬খ করে তিনি আরও জানান, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য নিজস্ব ২টি ড্রেজার ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মোংলা বন্দর ব্যবহার করার জন্য নেপাল ও ভুটানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, তারা মোংলা বন্দর ব্যবহার করলে বন্দরের কার্যক্রমে আরো গতিশীলতা আসবে এবং দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম সম্পর্কে আরও বেশি প্রচার প্রচারণা চালানো দরকার। বন্দরের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বুকলেট তৈরি করে আমাদের বিদেশী মিশনগুলোর মাধ্যমে প্রচারণা বাড়াতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পত্র দেয়া হবে বলেও জানান উপদেষ্টা। এ সময়ে দেশের সকল নদীবন্দর, স্থল বন্দর, সমুদ্রবন্দরগুলোকে নিয়ে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরী করা হবে বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দরকে ব্র্যান্ডিং করতে এবং বন্দরের কার্যক্রমকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ‘হানিফ সংকেত পরিচালিত ইত্যাদি অনুষ্ঠানটি’ মোংলা বন্দরে ধারনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
সভায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমানসহ বন্দরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।