বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.মো.মোখলেস উর রহমান বলেছেন, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে যারা বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এটি হচ্ছে এবং আরও দ্রæত হবে। প্রশাসনের কর্মকর্তা যারা ভালো,বিগত দিনের কর্মকান্ডে পদায়নযোগ্য তাদের পদায়ন করা হচ্ছে।
আজ ১৩ অক্টোবর রোববার বিকালে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মোখলেস উর রহমান বলেন,জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আহত-নিহতদের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান চলছে। আমাদের সঙ্গে তদন্তে জাতিসংঘের টিমও কাজ করছে। সরকার চাচ্ছে যেন জনগণ এসব তদন্তের বিষয়ে প্রতিফলন দেখতে পায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে মাঠ প্রশাসনসহ যারাই জড়িত ছিলেন,তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১৪ জন সচিবকে ওএসডি করা হয়েছে। তবে এটি তেমন শান্তি না। অনেককে বদলিও করা হয়েছে। ১৬ বছরে অনেকে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল।
সিনিয়র সচিব বলেন,আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলাম। এটি আমার জন্য সৌভাগ্যের। আমরা জনগণের সেবক না চাকর। সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আপনার সিটি কর্পোরশনে যাবেন, কথা বলবেন। জনগণের জন্য প্রশাসকরা কাজ করবেন।
আবু সাঈদ হত্যা মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,আবু সাঈদ এখন ইন্টারন্যাশনাল ফিগার। আমি ভাগ্যবান,তার কবর জিয়ারত করতে পেরেছি। আবু সাঈদ যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো,সেই বিশ্ববিদ্যালয় কারমাইকেল কলেজের জমিতে প্রতিষ্ঠিত। আমি কারমাইকেল কলেজের ছাত্র ছিলাম। যাই হোক, এই যে অভ্যুত্থান কিংবা বিপ্লব যাই বলি না কেন, এই জাতি সারাজীবন আবু সাঈদকে স্মরণ করবে। শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার পরিবারের নিরাপত্তা দেবে প্রশাসন।
মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, আবু সাঈদসহ আন্দোলনে নিহত ও আহতরা আমাদের গর্ব। আবু সাঈদ ছিল জুলাই আন্দোলনের ইউটার্ন। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সারা দেশে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। তার আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। শেষ পর্যন্ত হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। এসময় তিনি প্রশাসনকে আবু সাঈদের পরিবারের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আবু সাঈদের বাড়ি যাওয়ার সব সড়ক সংস্কার ও পাকাকরণেরও আশ্বাস দেন। এর আগে দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরে পৌঁছান মোখলেস উর রহমান। পরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় তিনি আবু সাঈদের পরিবারকে এক লক্ষ টাকা প্রদান করেন। এসময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী, বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) আজমল হোসেন, হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আখতারুজ্জামান, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।