কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের মরদেহ প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর ফেরত পেল পরিবার

কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের মরদেহ প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর ফেরত পেল পরিবার

প্রকাশিত: ৩:২৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪

বর্তমান খবর,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে স্বর্ণা দাস (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার সময় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কিন্তু রবিবার রাতে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে এ ঘটনা ঘটলেও, জানাজানি হয় মঙ্গলবার সকালে। পরে চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে স্বর্ণা দাসের লাশ বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ।

কুলাউড়া থানার সাব ইন্সপেক্টর বিজয় প্রসাদ দেবনাথ বাংলাদেশের পক্ষে লাশ গ্রহণ করেন। এ সময় বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভারতীয় পক্ষে বিএসএফ ও ইরানী থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, গত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার সময় নোম-ম্যান্স ল্যান্ডে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীবাহিনী বিএসএফের গুলিতে ওই স্কুলছাত্রী নিহত হলেও সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত লাশ পড়ে ছিল ঘটনাস্থলে। পরে বিজিবি-বিএসএফ’র কোম্পানি কমান্ডারপর্যায়ে পতাকা বৈঠকের পর লাশ ফেরতের উদ্যোগ নেয়। পরে ভারতীয় পুলিশ লাশের পোস্টমর্টেম শেষে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ভারতীয় পুলিশ কুলাউড়া থানা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে।

নিহত স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে স্থানীয় নিরোদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো।


বাবা পরেন্দ্র দাস ও মা সঞ্জিতা রানী দাস বলেন, তাদের চার ছেলে-মেয়ে। এক ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরায় থাকেন। ছেলেকে দেখতে সঞ্জিতা ছোট মেয়ে স্বর্ণাকে সাথে নিয়ে রবিবার লালারচক সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাদের সাথে চট্টগ্রামের এক দম্পতিও ছিলেন। রাত ৯টার সময় ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে স্বর্ণা ঘটনাস্থলে মারা যায়। তাদের সাথে থাকা দম্পতিও আহত হন। গুলি থামার পর সঞ্জিতাসহ বাকিরা লালারচক গ্রামের একটি বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেন। পরে আহত দম্পতিকে চিকিৎসার জন্য সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে বিজিবির শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, খবর পেয়ে বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। এরপর ভারতীয় পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে বিজিবি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুলাউড়া থানা পুলিশের কাছে স্বর্ণার লাশ হস্তান্তর করে।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষন রায় বলেন, সন্ধ্যা ৬টার সময় ভারতীয় পুলিশ আমাদের কুলাউড়া থানা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে। এ সময় দুই দেশের পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।