বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো: বাহে ছাওয়াটার খুব পেটের ব্যথা। ডাক্তার দেখার হাসপাতালোত নিয়া আসনো কিন্তু গেটোত তালা ঝুলছে। ডাক্তাররা নাকি চিকিৎসা দিবার নেয়। ওমার (চিকিৎসক) নাকি আন্দোলন হওচে। চিকিৎসা বন্ধ থুইয়া আন্দোলন করলে হামরা বাঁচমো কেমন করি? ১ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অসুস্থ ছেলের চিকিৎসাসেবা নিতে এসে এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন আনোয়ার আলী। তাঁর বাড়ি রংপুর সদরের পাগলাপীর এলাকায়। চিকিৎসক দেখাতে না পেরে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে যান তিনি। শুধু আনোয়ার আলী নয়, তাঁর মতো শত শত মানুষ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছে। এতে দুর্ভোগ ও ঝুঁকি বাড়ছে রোগীদের। রোগী ও স্বজনদের দাবি, চিকিৎসকেরা রোগীদের জিম্মি করে আন্দোলন করছেন। এতে বড় ধরনে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। চিকিৎসাসেবা চালু রেখে তাঁরা চিকিৎসকদের আন্দোলনের আহŸান জানান।
রমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বহির্বিভাগসহ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কক্ষ ভাংচুর ও চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সারা দেশের ন্যায় রবিবার দুপুর থেকে রমেক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করেন। এসময় চিকিৎসকেরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীকে গ্রেফতার ও হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সব হাসপাতালে সিকিউরিটি ২৪ ঘণ্টা থাকতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
জরুরি বিভাগের সামনে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা বুড়িরহাট এলাকার আয়মান হোসেন বলেন, হঠাৎ করে চিকিৎসকেরা জরুরি বিভাগ বন্ধ করে দেয়। কোনো রোগী দেখছে না, ভর্তি নিচ্ছে না। তাহলে আমরা যাব কোথায়। যত আন্দোলন হচ্ছে সবগুলোতেই আমরা সাধারণ মানুষ বলির পাঁঠা হচ্ছি। আমাদের আন্দোলনের হাতিয়ার বানানো হচ্ছে। এগুলো অমানবিক।
হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা ডাঙ্গীরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আখতারুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকদের ধর্ম বিরতি নয়, এটা অসুস্থ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে। বুঝতে পারছেন, যদি ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকেরা সারা দেশে সেবা না দেয়। তাহলে কী হাল হতে পারে। আমরা চাই চিকিৎসকদের সমস্যার সমাধান হোক, আমরা যেন চিকিৎসাসেবা পাই।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আ ম আখতারুজ্জামান বলেন, আগের কর্মবিরতিগুলোতে জরুরি বিভাগ খোলা রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলেও চিকিৎসকদের এবার আন্দোলনটা ভিন্ন। তাঁরা কমপ্লিট শাটডাউন দিয়েছে। এতে জরুরি বিভাগসহ সব বিভাগে সেবা বন্ধ রয়েছে। এখানে আমাদের প্রশাসনের করার কিছু নেই।
