পুলিশ থানায় ফিরলেও সদরপুরে জনমনে আতংঙ্ক

পুলিশ থানায় ফিরলেও সদরপুরে জনমনে আতংঙ্ক

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০২৪

বর্তমান খবর,সদরপুর(ফরিদপুর)প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় ভাবে পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ জারি হলে সদরপুর থানায় ফিরেছে পুলিশ সদস্যরা। তবে তারা সাদা পোষাকে রয়েছেন। থানার নিরাপত্তায় পুলিশের সাথে রয়েছেন আনসার সদস্যরা। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহল টিম অব্যাহত রয়েছে।

সদরপুর থানায় ভাংচুর, হামলা ও অগ্নিসংযোগের কারনে পুলিশ সক্রিয় কার্যক্রম করতে পারছে না। এ কারনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্থানীয় থানা পুলিশে কে। পুলিশের সক্রিয় কার্যক্রম না থাকায় এখন উপজেলার নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও জনমনে আতংঙ্ক রয়েছে।

পুলিশ সক্রিয় না থাকলেও স্থানীয়রা নিজ নিজ উদ্যোগে পাড়া মহল্লা, হাট বাজারে রাত জেগে দলবেধে পাহারা দিচ্ছেন তাদের জানমাল হেফাজতের জন্য। কিন্তু ডাকাত, নাশকতা, অরাজকতার আতঙ্ক বিরাজ থাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত তাদের এ পাহারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্থানীয় জনতারা।

ক্ষমতাসীন আ’লীগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর সারাদেশে বিজয় উল্লাস শুরু হয়। বিজয় উল্লাস কে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তরা সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় সদরপুর থানা, ওসি, ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয় এবং বাসভবন, আনসার ক্যাম্পসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা চালায় বিক্ষোভকারী ও দৃর্বৃত্তরা।

হামলার পরবর্তীতে সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শটগান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ফিরিয়ে দিয়ে গেছেন অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তি। গত বুধবার রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসারের হাবিলদার আবদুল লতিফের কাছে মোটরসাইকেল ও অস্ত্রটি জমা দেওয়া হয়। আনসার ভিডিপির ফরিদপুর জেলা কমান্ড্যান্ট নাদীরা ইয়াসমিন গত বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ফেরত দেওয়া শটগানের গায়ে ‘কে আর জি/ ৪২৫২২৪২’ নম্বর লেখা রয়েছে। যিনি অস্ত্রটি জমা দিয়েছেন, তিনি জানান, অপরিচিত এক ব্যক্তির ফোন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ অস্ত্রটি আটরশি দরবার শরিফের পাশে নির্মাণাধীন একটি দোকানঘরে একটি বস্তার ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।

নাদীরা ইয়াসমিন আরও জানান, হাবিলদার আবদুল লতিফের নেতৃত্বে আটজন আনসার সদস্য বর্তমানে সদরপুর থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। মোটরসাইকেল গুলো সদরপুর থানায় আনসার সদস্যদের জিম্মায় রাখা হয়েছে। শটগানটি ফরিদপুরের দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল নাহিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে মিছিল থেকে একদল বিক্ষোভকারী সদরপুর থানায় হামলা করে। তারা থানার সামনে থাকা ইউএনও, ওসির গাড়ি ও একটি পুলিশ ভ্যানে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় কিছু পুরোনো মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল লুট করে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও থানার অস্ত্রাগার ভেঙে অস্ত্র-গুলি লুট করা হয়।

এ ব্যাপারে সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম প্রতিবেদক কে জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশ থানায় ফিরেছে। ক্ষতিগ্রস্থ থাকায় বর্তমান কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে বেশ সময় লাগবে। থানার যত প্রকার উপকরণ ছিল সবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিধায় স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হতে সময় লাগবে। থানার কতগুলো অস্ত্র বা কতগুলো মোটরসাইকেল ছিল, তা হিসাব না করে এই মূহুর্তে বলা সম্ভব না।

এ ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারনের সাথে আলাপকালে জানা যায়, দ্রুত সদরপুর উপজেলার আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সক্রিয় কার্যক্রম থাকতে হবে এবং সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত থাকতে হবে।