দালালের খপ্পরে পড়া গাংনীর ১৫০ বাংলাদেশি যুবক মালেশিয়ায় ইমিগ্রেসন পুলিশ হেফাজতে
বর্তমান খবর,মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ মাস চারেক আগে দালালের হাত ধরে সূদুর মালেশিয়ায় গিয়ে এক রকম বন্দী ছিলেন মেহেরপুরের গাংনীর ২৩৮ যুবক। তিনটি ক্যাম্পে মানবেতর জিবন যাপন করছিলেন তারা। এরই মধ্যে দুটি ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ১৫০ বাংলাদেশিকে হেফাজতে নিয়েছে মালেশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ। আজ সোমবার ভোরে এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশি যুবকরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাদের পরিবারকে। এখন প্রতারিত যুবকদের পরিবারে শুধু ষিাদের ছায়া। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে কারো মা বাবা ভাই বোন ও স্ত্রী। তাদেরকে কোন এজেন্সি ছাড়িয়ে আনতে যায়নি বরং নানাভাবে হুমকী দেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগি পরিবারের লোকজন।
মালেশিয়ায় পাড়ি জমানো তেকালা গ্রামের সাজেদুর রহমান মিঠুন আজ সোমবার ভিডিও বার্তায় তার স্ত্রী সোনিয়া খাতুনকে জানান, ভোর থেকেই মালেশিয়ান ইমিগ্রেসন পুলিশ চেরাস ক্যাম্পের চারদিকে অবস্থান নেয়। পরে সম্মিলিতভাবে অভিযান চালিয়ে ১০৫ জনকে আটক করে গাড়িতে করে নিয়ে গেছে। কয়েকজনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। কোথায় নিয়ে গেছে তা কেউ বলতে পারেনি। তবে ভিডিওতে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন মিঠুন।
কুঞ্জনগরের বকুল হোসেন জানান, তার ছেলে রাজুসহ ৪৫ জনকে সে দেশের পুলিশ আজ সোমবার সকালে ধরে নিয়ে গেছে। চারমাস ধরে রাজুসহ তাদেরকে সালাক সালাকা শহরের একটি ক্যাম্পে বন্দি রেখেছিল দালালরা। এদের প্রত্যেকজনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম নাড়া মেম্বর, আমিনুল ইসলাম শাহীন, হাফিজ কেরানী, মাসুদ, লিটন, হাসান আলী দপ্তরি ও মুনসুর আলীর সমন্বয়ে গঠিত চক্রটি ঢাকার বনানীতে অবস্থিত মুসা অ্যান্টারপ্রাইজ স্বত্বাধিকারী সাহেবনগরের আব্দুল আওয়ালের মাধ্যমে মালেশিয়াতে লোক পাঠায়। ৭৪ জনকে সেরে ক্যাম্প বাগান নামক স্থানে, চেরাসে ১০৫ ও সালাক সালাকা শহরে ৫৯জনসহ ২৩৮ জনকে একরকম বন্দী রাখে। তাদের মূল কোম্পানির নামে কাগজপত্র তৈরি করলেও কোনো কাজ দেওয়া হয়নি। এর আগে তাদের পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজেদের আয়ত্তে নেয়।
এদিকে মুসা অ্যান্টারপ্রাইজের কর্মী ও দালাল সাহেবনগর বহুমূখি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী হাসান জানান, মূল কোম্পানির জন্য এদের রিক্রুট করলেও চায়না কোম্পানির জন্য যুবকদের মালেশিয়া আনা হয়। কোম্পানীর লোকজন ও এজিন্সীকে দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।