বর্তমান খবর,পার্বতীপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধি : ২১ ফেব্রæয়ারি। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। বিদ্যালয় আছে। নেই শহীদ মিনার। তাই হয় না একুশে ফেব্রæয়ারির কোনো আয়োজন। নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে না। ভাষা সৈনিকদের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও প্রকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। যদিও সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক।
ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পেরিয়ে গেলেও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ৮৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো নির্মাণ করা হয়নি স্থায়ী শহীদ মিনার। প্রাথমিকের ২০৬ টি যে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। দিপশিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের জরাজীর্ণ অবস্থা। অযতেœ অবহেলায় পড়ে আছে শহীদ মিনার। সরেজমিনে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমূল্য চন্দ্র রায় শহীদ মিনার সংস্কারের জন্য কয়েকবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে ধর্ণা দিয়ে লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে নিম্ন মাধ্যমিক,মাধ্যমিক,স্কুল অ্যান্ড কলেজ,মাদরাসা,কলেজ ও কারিগরি কলেজ মিলে ১২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। প্রায় ১৫০ কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে শহীদ মিনার নেই। ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কমিটির সভাপতিকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তারপরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো শহিদ নির্মাণ করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষিকা বলেন, আমার স্কুলের পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। কিন্তু অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বও অনুধাবন করতে পারছে না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইট-সিমেন্টের মানসম্মত শহীদ মিনার রয়েছে।
উপজেলার ৫১ মাধ্যমিক ও ৩২ মাদ্রাসা পর্যায়ের ৮৩টিা প্রতিষ্ঠানগুলো শহীদ মিনার বিহীন। পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক সরকার বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। কয়েক বছর আগে উপজেলার ২০৬ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
পার্বতীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আশরাফুল হক প্রধান বলেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেওয়ার পরও তারা নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মাউশির নির্দেশনার বিষয়ে অবগতও করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের আদেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। প্রয়োজনে নিজেদের উদ্যোগে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন মাউশি।