জীবননগরে ১০ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা

প্রকাশিত: ৩:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২৩

বর্তমান খবর,চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : শাক তুলে দেওয়ার কথা বলে চুয়াডাঙ্গার চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে মরিয়ম (১০) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের হাড়িভাঙ্গা মাঠে এই হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহত মরিয়ম গোয়ালপাড়া দক্ষিণ নতুন মসজিদ পাড়ার ভ্যানচালক ইকবাল মণ্ডলের বড় মেয়ে। ঘটনার পরপরই চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা, জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ জাবীদ হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, চার বান্ধবীর সাথে বাড়ির পার্শ্ববর্তী হাড়িভাঙ্গা মাঠে যায় ওই শিশু। এসময় শাক তুলে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মাঠের একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে অজ্ঞাত এক যুবক। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা নিশ্চিত করে। ঘটনার সময় ভয়ে পালিয়ে এসে লোকজনকে খবর দেয় তার বান্ধবীরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিশুর বিবস্ত্র গলাকাটা মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী।

প্রত্যক্ষদর্শী শিশু সিনহা বলেন, আমরা শাক তুলতে গেলে একজন এসে আমাদের বলে চল ওদিকে শাক আছে কি দেখি। তারপর আমাদের কিছু দূর নিয়ে গিয়ে ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে সে ঘাস কাটছিলো আর আমরা শাক তুলছিলাম। তখন মরিয়ম শাক রেখে আসতে গিয়ে আর ফিরেনি।

নিহতের মা জোবেদা বেগম বলেন, ‘ ছোট বোন আছিয়া আর পাশের বাড়ির শিশু হুজাইফা, সিনহা সঙ্গে ময়িরম মাঠে শাক তুলতে গিয়েছিল। দুপুরে ওরা এসে বলে ময়িরমকে পাচ্ছে না। একজন ময়িরমকে ভুট্টার মধ্যে নিয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা মাঠে চলে আসি। মাঠে খুঁজতে খুঁজতে এসে দেখি ভুট্টার মধ্যে ময়িরমের লাশ পড়ে রয়েছে। গলা কাটা, গায়ে শুধু গেঞ্জি।

মরিয়মের চাচী সেলিনা বেগম বলেন, ‘মরিয়মরা তিন শিশু মাঠে শাক তুলতে গিয়েছিলো। তিনজন কাঁদতে কাঁদতে এসে বলছে ময়িরমকে পাচ্ছে না। একজন ময়িরমকে ভুট্টার মধ্যে নিয়ে গেছে। আমরা তখন রান্না বান্না ফেলে মাঠে খুঁজতে থাকি। অনেক খোঁজাখুজি পর ভুট্টার মধ্যে গিয়ে দেখি কি জেনো পড়ে আছে, কাছে এসে দেখি চিৎ হয়ে মরিয়ম পড়ে রয়েছে। পরনে খালি গেঞ্জি ছিল।’

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম মিল্টন বলেন, ঘটনাটি শোনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, এ ঘটনার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিক কাজ শুরু করেছে। কে বা কারা হত্যা করেছে এটা আমরা এখনও উদঘাটন করতে পারিনি। তারপরও আমাদের সম্ভাব্য ওয়ে গুলো আছে সেগুলোর মাধ্যমে আমরা তদন্ত করছি। অচিরেই যে হত্যা করেছে তাকে আইনের আওতায় আনবো।

ধর্ষন করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পরই জানা যাবে যে শিশুটি ধর্ষনের শিকার হয়েছিল কিনা। লাশের গলা কাটা ছিলো, এটা আমরা দেখেছি, কিভাবে গলা কাটা হলো বা কি দিয়ে কাটলো এগুলো আমরা তদন্ত করছি।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, একটি অবুঝ শিশুর সাথে যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। দিনে দুপুরে মাঠে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা সভ্যসমাজ কোনভাবেই সমর্থন করে না। অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে সর্বোচ্চ বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।