কেশবপুরে পাঁজায় প্রকাশ্যে কাঠ দিয়ে পুড়ছে ইটঃ প্রশাসন নীরব

প্রকাশিত: ১২:২৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২৩

বর্তমান খবর,কেশবপুর(যশোর)প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুরের অধিকাংশ পালপাড়ার পঁাজায় মাটির তৈরি জীনিসপত্রের পরিবর্তে প্রকাশ্যে কাঠ দিয়ে অবৈধভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এতে এলাকার বৃদ্ধসহ শিশুরা শ্বাস প্রশ্বাসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলার মাদারডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথ পাল প্রতিকার চেয়ে গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে কমবেশী পাল সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস রয়েছে। পারিবারিকভাবে এ সম্প্রদায়ের লোকেরা মাটির তৈরি বিভিন্ন জীনিসপত্র তৈরিসহ বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমান প্লাস্টিক,অ্যালুমোনিয়াম ও চীনা মাটির তৈরি জীনিসপত্রের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হওয়ায় পর্যায়ক্রমে মাটির তৈরি জীনিসপত্রের কদর কমে গেছে। যে কারণে পাল সম্প্রদায়ের অনেক লোকেরা পেশা পরিবর্তন করে ভিন্ন পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছে। কিন্তু কিছু কিছু পরিবার বাপ-দাদার এ পেশাকে আকড়ে ধরলেও মাটির তৈরি জীনিসপত্রের পরিবর্তে পঁাজায় পোড়াচ্ছে ইট। ভাটায় পোড়ানো ইট থেকে এ ইটের বাজার মূল্য কম হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার নিন্ম আয়ের মানুষের কাছে এর কদর অনেক বেশী। যে কারণে পাল সম্প্রদায়ের লোকেরা ইট তৈরিতে ঝাঁকে পড়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদারডাঙ্গা এলাকাটি অত্যাধিক ঘনবসতিপূর্ণ। এলাকার গৌরপালের দু’ছেলে জগদিস পাল, জয়দেব পাল ও রবিন পালসহ ১০/১২টি পরিবার মাটির তৈরি জীনিসপত্র তৈরির পরিবর্তে দীর্ঘদিন ধরে পাজায় কাঠদিয়ে অবৈধভাবে ইট পোড়াচ্ছে। এতে এলাকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষীত হচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই পঁাজার কালো ধেঁায়ায় এলাকার আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। এতে এলাকার বৃদ্ধসহ শিশুরা শ্বাস প্রশ্বাসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পঁাজার কালো ধেঁায়ায় এলাকার ফলদ বৃক্ষসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এযেন দেখার কেউ নেই।

সমরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি পঁাজার সামনে শতাধিক মন কাঠ প্রকাশ্যে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এতে এলাকার খেঁজুর গাছসহ বৃক্ষ উজাড় হচ্ছে। পঁাজায় কাঠের পরিবর্তে কয়লা পোড়ানোর দাবি এলাকাবাসির।

এ ব্যাপারে পঁাজার মালিক জয়দেব পাল জানান, আমাদের মাঠে কোনো জায়গা জমি নেই। বাপ-দাদার হাতে একাজ শিখেছি। মাটির তৈরি জীনিসপত্রের চাহিদা না থাকায় বাধ্য হয়ে ইট পোড়ানোর কাজ করছি। একাজ না করলে আমরা খাবো কি?

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুহিন হোসেন বলেন, এ ঘটনায় এলাকা থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।