
বর্তমান খবর,ডেস্ক রির্পোট :
অমর একুশে বইমেলার ২৫তম দিনে আজ নতুন বই এসেছে ১০১টি। এর মধ্যে গল্প ১৮টি, উপন্যাস ২টি, প্রবন্ধ ৬টি, কবিতা ২৩টি, গবেষণা ৫টি, ছড়া ১টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ২টি, রচনাবলি ১টি, মুক্তিযুদ্ধ ১টি, নাটক ২টি, বিজ্ঞান ২টি, ভ্রমণ ৩টি, ইতিহাস ৩টি, রাজনীতি ২টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য২টি, ভাষা ২টি, গণ-অভ্যূত্থান ২টি, ধর্মীয় ২টি, অনুবাদ ১টি, অভিধান ১টি, সায়েন্স ফিকশন ১টি এবং অন্যান্য ৭টি।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব চিত্তরঞ্জন সাহা, মুনীর চৌধুরী, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ।
২০২৪ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কথাপ্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার২০২৫ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঠক সমাবেশ (প্লেটো : জীবন ও দর্শন—আমিনুল ইসলাম ভুইয়া), ঐতিহ্য (ভাষা শহিদ আবুল বরকত : নেপথ্য-কথা— বদরুদ্দোজা হারুন) এবং কথা প্রকাশকে (গোরস্তানের পদ্য : স্মৃতি ও জীবন স্বপ্ন—সিরাজ সালেকীন) মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ দেওয়া হয়।
২০২৪ সালে গুণমান বিচারে সর্বাধিক সংখ্যক শিশুতোষ বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কাকাতুয়াকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ দেওয়া হয়।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ উপলক্ষে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাকতাবাতুল ইসলাম (১ ইউনিট); গ্রন্থিক প্রকাশন (২-৪ ইউনিট) ও বাতিঘর (প্যাভিলিয়ন)-কে কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ দেওয়া হয়।
আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার অমর একুশে বইমেলার ২৬তম দিন। এদিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩ টায় এবং চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলাদেশ বিনির্মাণ : শিক্ষা ও প্রযুক্তি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সামিনা লুৎফা নিত্রা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন কল্লোল মোস্তফা এবং এহ্সান মাহমুদ।
সভাপতিত্ব করবেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় অমর একুশে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘গণ-অভ্যুত্থান, গ্রাফিতি এবং অপরাপর ভিজ্যুয়াল কালচার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুনেম ওয়াসিফ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তাসলিমা আখতার এবং কামার আহমাদ সাইমন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
প্রাবন্ধিক মুনেম ওয়াসিফ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের আগে এবং পরে দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা গ্রাফিতি, চিত্র ও লেখাগুলো থেকে বোঝা যায়, গত এক দশকের বেশি সময় আমরা যে ক্ষমতার জাঁতাকলের মধ্যে বসবাস করেছি, তরুণ প্রজন্ম সেই ক্ষমতার কর্তৃত্বকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চেয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের বেশিরভাগ গ্রাফিতি ও চিত্রগুলো গতানুগতিক শিল্পধারা অনুসরণ করেনি। এ জন্যই সেগুলো এত অসাধারণ। এসব ছবির মাঝে এক ধরনের তেজ, ক্রোধ, ক্ষমতাকে প্রশ্ন করার সাহস এবং উপহাস কিংবা গভীর রাজনৈতিক বিষয়কে হাস্যরসে পরিণত করার প্রবণতা আছে। এর ভিত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই আস্তে আস্তে তৈরি হয়েছে।
আলোচকদ্বয় বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেওয়ালে আঁকা গ্রাফিতি ও চিত্রগুলো শুধু ক্ষমতার কেন্দ্রকেই নয়, বরং শিল্পের প্রতিষ্ঠিত সংজ্ঞা ও ভাষাকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। মানুষের সহজাত ভাষা, চিন্তা ও সমষ্টিগত আবেগকে ধারণ করে এসব গ্রাফিতি হয়ে উঠেছে অভ্যুত্থানের অন্যতম শক্তিশালী প্রকাশ মাধ্যম। গণ-অভ্যুত্থানের সময় গ্রাফিতির ভাষা, শ্লেষ ও ক্ষোভ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার সাহস জুগিয়েছে এবং ছাত্র, তরুণ, শ্রমিক ও সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে দেওয়ালে কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব গ্রাফিতি ও চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো নিয়ে শিল্পগত ও নান্দনিক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি আরও নানামাত্রিক আলোচনা হতে পারে। এগুলোকে যদি যথার্থ স্থানে এবং মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা যায় তবে এর যে ব্যাখ্যাগত সম্ভাবনা দাঁড়াবে সেটা হবে অসীম ও অসামান্য।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন— কবি ও সম্পাদক শওকত হোসেন এবং কবি শামীমা চৌধুরী।
এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন মতিন বৈরাগী, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, সুহিতা সুলতানা, শওকত হোসেন, কামাল মুস্তাফা এবং মীর তারিকুল ইসলাম।
শায়লা আহমেদের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘নজরুল আবৃত্তি সংসদ’ এবং রবিউল আল রবি’র পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘নটনন্দন’-এর পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রোজী আক্তার শেফালী, অন্তর সরকার, মনীন্দ্র দাস, ফকির আবুল হাশেম, শাহ আলম দেওয়ান, দেলোয়ার হোসেন বয়াতি, শিপ্রা ঘোষ, সনৎ কুমার বিশ্বাস, লুৎফর রহমান, রবিউল ইসলাম, মিন্টু বাউল, বিজন চন্দ্র রায় এবং আবদুল আউয়াল।