সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার (এসএপিপিও) সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ ওঠেছে।
কৃষি পুনর্বাসন ও কৃষি প্রণোদনাসহ সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। সম্প্রতি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তররের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক, জেলা প্রশাসক এবং দুর্ণীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চলমান কৃষি প্রণোদণার বীজ বাহির থেকে ভালোমানের ক্রয় করার কথা থাকলেও সোহরাব হোসেন তার নিজের লোকদের কাছ থেকে নিম্নমানের খোলা বীজ ক্রয় করে কৃষকদের কাছে বিতরণ করছেন। বীজের মান ভালো না থাকায় কৃষকরা ¶তিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এছাড়া কৃষি মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন রাজস্ব প্রকল্পের সমস্ত সমন্নয় বিল ভাউচার ও ব্যাংকের চেক বহি অফিস সহকারী থাকা সত্বেও তিনি নিজের মত করে আসছেন এবং কৃষকদের আন্ত পরিচর্যা ও বেড়ার জন্য কৃষকদের নামে যে চেক দেওয়া হয় তিনি নিজেই উত্তোলন করে। এবং অন্যকে দিয়েও টাকা উত্তোলন করে নিজে আত্মসাত করেন।
কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনে সমন্নিত বালাই ব্যবস্থাপনা আইপিএম প্রকল্পের টাকা বিভিন্ন স্কুলের নাম করণ করে ও ছবি সেশন করে আত্মসাত করেন। কৃষি মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন ডাল তেল প্রকল্পের কৃষকের তালিকা তিনি নিজে সিলেক্ট করে দেন এবং পছন্দের কৃষকদের নাম ডুকিয়ে দেন। যেন প্রকল্প হতে প্রাপ্ত মালামাল কম দিতে পারে এবং বাকী মালামাল ছোহরাব আত্মসাৎ করতে পারে।
কৃষি মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন নিরাপদ ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে জৈব কৃষি বালাই ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের জন্য যে সকল উপকরণ ক্রয় করে কৃষকদের মধ্যে বিতরন করার কথা থাকলেও ফাইলটি তিনি ডিল করায় কৃষকদের যথাযথ উপকরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। কামার যন্ত্রিকি প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকদের মাধে ভর্তুকি মূল্যে যে সকল মেশিনারী দেওয়ার হয় সোহরাব সে সকল তালিকায় এসএপিপিও তার নিকট আত্মীয়দের নাম রয়েছে। শুধু তাই নয় রাজস্ব প্রদর্শনী বলেন,ডাল, তেল প্রদর্শনীতে বেশী সার ও বীজ থাকে যে কোন বড় মালামাল সরকার কর্তৃক যা কৃষকদের জন্য বরাদ্দ আসে সবই সোহরাব হোসেন তার নিজ আত্মীয় স্বজনের নামে দিয়ে দেন।
ইউনিয়ন ওয়ারী খুচরা সার বিক্রেতার নিয়োগের ফাইলটি ও সোহরাব এসপিপিও ডিল করায় উক্ত খুচরা সার বিক্রেতা নিয়োগে অনিয়ম করেন। যাহা হাইকোর্ট পর্যন্ত রিট রয়েছে। যাহার প্রমান উপজেলা সুরমা ইউনিয়নে মাহবুব এন্টারপ্রাইজ।
২0১৯-২০ অর্থ বছরে মান্নারগাওঁ ইউনিয়নে আউশ,আমন, বোরোর, মাষ্টার রোল অন্তর্ভুক্ত কৃষকদের নিকট গেলে পাওয়া যাবে তার দুর্নীতির প্রামান। শুধু একটি ইউনিয়নে নয় বেশ কয় ইউনিয়নে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সোহরাবের বিরুদ্ধে।
অফিসের সব কিছুতেই সোহরাব হোসেনের দৌরাত্ব ও প্রভাব রয়েছে। যেমন ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কৃষি প্রনোদণা মান্নারগাওঁ ও অন্যান্য ইউনিয়নে কৃষকের ভুয়া নাম দিয়ে মাষ্টার রোল স¤পুর্ন করে কৃষকের মালামাল আত্মসাত করেন মান্নারগাওঁ ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি অফিসারের যোগসাজশে।
বর্তমানেও সরকার কর্তৃক কৃষি প্রনোদনা ও কৃষি পুনর্বাসনের জন্য বীজ,বাদাম ও মশুর ও অন্যান্য বহির থেকে উন্নত মানের বীজ ক্রয় করার কথা থাকলেও সোহরাব হোসেন তার আত্মীয় স্বজনের দোকান থেকে সংগ্রহ করে খোলা বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেন।
বাস্তবে দেখা যায় বীজগুলো গুণগত মান ভাল না হওয়ার কারনে কৃষকগন ক্ষতিগ্রস্ত সম্মুখীন। উপজেলা কৃষি অফিসার ভারপ্রাপ্ত ও যোগাযোগ করায় সোহরাব হোসেন এসএপিপিও এর দুর্নীতি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্নিত জেলা কার্যালয়ে সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন দোয়ারাবাজারের বঞ্চিত কৃষক রিয়াদ আহমদ।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা(এসএপিপিও) সোহরাব হোসেন বলেন, এসব প্রকল্পের বিষয়ে আমরা কোন দায়িত্ব নেই। যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে থাকেন তাদের এই দায়িত্ব। তাই এসব দুর্নীতির সাথে আমার স¤পৃত্ত থাকার কোন সুযোগ নেই।
Leave a Reply