ঝিনাইদহ,১মার্চ ২০১৯,শেখ শফিউল আলম: এক সময় যার সুখের সংসার ছিলো। কখনো কারো কাছে হাত পাততে হয়নি, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে ভিক্ষা করে নিজের সংসার চালান।
যার জন্ম ১৯৪২ সালে, এখন বয়সের ভারে নূয়ে পড়েছেন এই ৭৭ বছর বয়সী পুটি বালা। এখন আর ঠিকমত চলাফেরা করতে পারে না। স্বামী মারা গেছে প্রায় ২৫ বছর আগে কিন্তু তার ভাগ্যে জোটেনি একটি বিধবা ভাতা কার্ড।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ছোটভাটপাড়ায় ছোট্ট একটি কুড়ে ঘরে বাস করেন। এই বয়স্ক মানুষটি বললেন, আমার একটা বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতা কার্ড করে দাও না বাবা, আর কত বয়স হলে আমি বয়স্ক বা বিধবা ভাতা কার্ড পাবো ?
বৃদ্ধা পুটি বালার ছোট ভায়ের বউ সরলা দাস জানান, দিদির জন্য বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য কত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে কিন্তু কেউ একটি কার্ড করে দেয়নি। পুটি বালা বলেন, বয়স্ক ভাতা কার্ড করে দেবার কথা বলে অনেকে কথা দিয়েছে কিন্তু কেউ কার্ড করে দেয়নি। নিরুপায় হয়ে আজ তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন।
পুটি বালা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, অনেক দিন না খেয়ে থাকতে হয় । তিনি বলেন তার ভাই বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরী করে কোন মতে সংসার চালায় তার উপর আবার পুটি বালা বোঝা হয়ে আছে । অন্যন্যোপায় হয়ে পুটি বালা এখন ভিক্ষা করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, আমরা আগের ও বর্তমান চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে পুটি বালার জন্য একটি কার্ড করে দেবার কথা বলেছি। সবাই বলে, করে দিব। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই বয়স্ক মানুষটাকে কেউ একটা কার্ড করে দেয়নি।
ছোটভাটপাড়া গ্রামের কাদের মেম্বর জানান, আমি তাদের ১০ টাকা কেজি চাউলের আওতায় এনে দিয়েছি। পরবর্তীতে পুটি বালার বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতা যে কোনো একটি কার্ড করে দিবো।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াস রহমান মিঠু জানান, এবার যখন বয়স্ক বা বিধবা ভাতা কার্ড বন্টন করা হয় তখন আমি রাজনৈতিক মামলায় জেলহাজতে আটক ছিলাম প্যানেল চেয়ারম্যান এই কার্ড গুলি বন্টন করেছে। তবে আমি আগামিতে পুটি বালাকে বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতা যে কোনো একটি কার্ড করে দিবো।
Leave a Reply