
বর্তমান খবর : শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বাতিল, স্বতন্ত্র অনুষদসহ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক সংকট, বাজেট সংকট নিরসন এবং ল্যাব সরঞ্জামাদির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সিরাজগঞ্জের সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত একমাস যাবৎ অধ্যক্ষের কক্ষসহ একাডেমিক কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে রেখে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন তারা।


শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়ায় পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তবে গত এক মাস যাবৎ আন্দোলন অব্যাহত থাকলেও সংকট নিরসনে কেউ এগিয়ে আসেনি।
জানা যায়, প্রাণী সম্পদ বিভাগ নিয়ন্ত্রণাধীন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হিসেবে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার আজুগড়া এলাকায় সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। সে হিসেবে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভেটেরিনারি কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অ্যানিমেলস সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের একই লেভেল এবং অভিন্ন প্রশ্নপত্রে একই সময় ও সূচিতে পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গত ২২ জুলাই শুধু তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করলেও সিরাজগঞ্জ ভেটেরিনারি কলেজের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বারবার ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি। ফলে ভেটেরিনারি কলেজের প্রথম বিভাগ ও দ্বিতীয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা অন্তত ৬ মাস পিছিয়ে পড়েছে। এ খবর জানার পরই গত ২৫ জুলাই শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন ও অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। গত এক মাস যাবৎ আন্দোলন অব্যাহত থাকলেও সংকট নিরসনে কেউ এগিয়ে আসেনি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এস এম ওলিউল্লাহ ও রিয়াদ হোসেন জানান, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। এতে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম অন্তত ৬ মাস পেছিয়ে পড়েছে। কবে, কখন পরীক্ষা হবে তাও আমাদের জানায়নি। আমরা শিক্ষাজীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।
শিক্ষার্থী হাবিবা খাতুন ও জয়শ্রী জানান, সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক সংকট রয়েছে। এক বিষয়ের পারদর্শী শিক্ষক অন্য বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। এতে পড়াশোনার মান নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে বাজেট স্বল্পতার কারণে ল্যাব সরঞ্জামাদির অভাব রয়েছে। যে কারণে আমরা প্র্যাকটিক্যাল কোনো কিছু শিখতে পারছি না। এছাড়াও দূষিত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে আমরা প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়ছি।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ন্যায্য উল্লেখ করে কলেজটির অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম জানান, বিষয়টি নিয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে একাডেমিক ভবনে তালা থাকায় ক্লাসও হচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছেন। মহাসংকটের মধ্যে রয়েছে কলেজটি।
তিনি আরও জানান, প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবে সাথে যোগাযোগের জন্য ঢাকায় যাচ্ছি। আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।