
বর্তমান খবর,চট্রগ্রাম ব্যুরোঃ দেওয়ানি আদালতের আদেশের তোয়াক্কা না করে থানায় নিয়ে গিয়ে মিথ্যা মামলার হুমকিসহ থানার প্রশ্রয়ে ভবনে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে পাঁচলাইশ থানার ওসি ও এসআইসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।


এ ছাড়া ওই মামলায় অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ আদেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. অলি উল্লাহ এ আদেশ দেন। মামলার আসামিরা হলেন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার রহমতগঞ্জ রোডের মৃত ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ছেলে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী (৪২),পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন মজুমদার,একই থানার এস আই মো.জাকির (৪০) সহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জন।
বিষয়টি বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আফরোজা আক্তার নিশ্চিত করে বলেন, ভবন ছেড়ে দিতে বাদীনির ছেলে থানায় নিয়ে শাসানো, ভবনে অনুপ্রবেশ করে পুলিশের সামনেই ভাঙচুর, মারামারি করে আসামিরা। এর আগে থানায় মামলা দিতে গেলেও ওসি মামলা নেয়নি। পরে আজ আদালতে মামলাটি আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত পিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানতে পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিনকে কল দিলে তা রিসিভ করেন এস আই (তদন্ত) আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। ওসি স্যার ছুটিতে আছেন। শনিবার রাতে তিন অফিসে আসবেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সাল থেকে পাঁচলাইশের জাংগাল পাড়ার রিজিয়া ম্যানশনের একটি ফ্লাটে বসবাস করছেন শামিমা ওয়াহেদ। ২০১২ সালে স্বামী ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী মৃত্যুর পরে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী শামিমা ওয়াহেদ ও তার দুই নাবালক সন্তানদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও সামাজিকভাবে হয়রানি করে। একপর্যায়ে গত ২৭ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে থানায় নিয়ে গিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ভবন ছাড়ার হুমকি দেন ওসি।
এসময় শামিমা ওসিকে রিজিয়া ভবনটি নিয়ে দেওয়ানি আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ বারবার দেখালেও তা তোয়াক্কা করেনি। গত ১২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওসির নির্দেশে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী ও এসআইসহ আরও পাঁচ থেকে ছয়জন সন্ত্রাসী নিয়ে ওই ভবনে অনুপ্রবেশ করেন। এসময় শামিমার ভাই সাজ্জাদুল ইসলামকে গলা চেপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করলে ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে এস আই জাকির অস্ত্র ঠেকিয়ে শামিমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আটকে রাখেন। এরপর প্রাণভিক্ষা চাইলে ওসির নির্দেশে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা।
১৫ দিনের মধ্যে চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজত বাস ও জানে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তারা। গত ১৬ আগস্ট ভবনে ঢুকে আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে তাদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে বিদেশি দৈত্যাকার কুকুর নিয়ে অবস্থান করে ভবনের বাসিন্দাদের ভয় দেখান তারা। এতেও পুলিশ নীরব দর্শকরের ভূমিকা পালন করেন। পরে ১৭ আগস্ট শামিমা ওয়াহেদ বাদী হয়ে ওসি ও এসআইসহ আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।