আমলাদের কাছে উপেক্ষিত জনপ্রতিনিধিরা

প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৩

বর্তমান খবর,নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকারি কর্মকর্তার(আমলারা) প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আর প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগন। জনগন ভোট দিয়ে সংসদ সদস্যদেরকে নির্বাচিত করেন। জনগন তাদের চাওয়া পাওয়া সুখ দুঃখ জানান তাদের প্রতিনিধি সংসদ সদস্যদের কাছে। সংসদ সদস্যরা জনগনের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেন। কিন্তু সেই প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগনের প্রতিনিধির কথা যখন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী(আমলা)রা শোনেন না তখন বুঝা যায় আমলারা জনগনকে মালিক হিসাবে মানেন না।

অথচ সংসদস্য তাদের চাওয়া পাওয়া মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ভোটেই নির্বাচিত হয়েছেন। ঘনিয়ে এসেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কাজ করতে না পারলে সেই জনগনের কাছে কোন মুখে ভোট চাইবেন এমপি মন্ত্রীরা! নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন এমপিদের দেয়া ডিও লেটার মন্ত্রী পর্যায়ের সুপারিশ থাকা সত্বেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগন তা ফাইলবন্দী করে ফেলে রাখছেন দিনের পর দিন। কোন সুপারিশ বা তদ্ববির আমলেই নিচ্ছে না মন্ত্রনালয়ের কতিপয় সচিবগন ফলে রোষানল বাড়ছে তৃনমুল পর্যায়ে।

কয়েক জন সংসদ সদস্যের ঘনিষ্টজনদের নিকট থেকে জানা যায় যে, বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিবগন এমপি দের ডিও লেটারে মন্ত্রীর সুপারিশ থাকা সত্বেও সচিবরা ডিও লেটার ফাইল বন্দি করে ফেলে রাখছেন এতে ডিও গ্রহীতা সাধারণ মানুষের নিকট বিভিন্ন প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছেন এমপি মন্ত্রী। ফাইল আটকিয়ে রাখা প্রতিযোগিতায় সব চেয়ে এগিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলেমান খান। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রবীণ সংসদ সদস্য বলেন আমি কয়েকটি ডিও ইস্যু করে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর সুপারিশ সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাই কিন্তু শিক্ষা সচিব সোলেমান খান এর দপ্তরে ফাইল বন্দি করে ফেলে রাখছেন, শুধু আমারই না আরো সংসদ সদস্যদের ডিও ফেলে রাখছেন তিনি।

শিক্ষা মন্ত্রীর সুপারিশ সত্বেও ফেলে রাখছেন। সামনে আসছে নির্বাচন,এসময়ে শিক্ষকরাই আমাদের ভোটে সহায়তা করে থাকেন, তাদের বদলী,পদন্নোতি,বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভুক্তিতে আমাদের ভুমিকা না রাখতে পারলে আমরা কোন মুখে তাদের নিকট ভোট চাইতে যাবো। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ এমপিও ভুক্তি হয়নি, সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি নির্বাচন পূর্বে না করে গেলে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বিএনপি জামাত গোষ্ঠী ক্ষমতায় গেলে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখনোই আর আলোর মুখ দেখতে পারবে না। অন্য একজন সংসদ সদস্য বলেন শিক্ষা সচিব সোলেমান খান আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান তার বাবা আওয়ামীলীগ করেন। ওনার শশুর আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা, স্ত্রী আওয়ামীলীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কিন্তু শিক্ষা সচিব সোলেমান খান এর মনোভাব দেখে বুঝায় যায় তিনি সরকারের নই বিএনপি-জামাতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর কিন্তু শিক্ষকরা তাদের নায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত নির্বাচনের সময় শিক্ষকরা ভোটের কর্মকর্তা হিসাবে বড় ভুমিকা রাখে, এই শিক্ষকদের কোন উপকারেই যদি না আাসা যায় কোন মুখে তাদের সামনে দাড়াবে আর কেনই বা ভোটের কর্মকর্তা হয়ে সরকারকে সহায়তা করবে। অভিজ্ঞরা বলেন মন্ত্রী-এমপির ডিও লেটার সচিবের কাছে আদেশ হিসাবে গণ্য হবার কথা কিন্তু সোলেমান খানের কাছে বিষয়টি উল্টা। অথচ আগের সচিবের সাথে মন্ত্রীর সঠিক সমন্নয় না হওয়ায় সোলেমান খান আওয়ামীলীগ পরিবারের দেখেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সচিব সোলেমান খানকে ঘিরে সংসদ সদস্যদের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের গোপন সুত্র জানিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীর সুপারিশ সত্বেও বিভিন্ন বদলী ফাইল সচিবের দপ্তরে মাসের পর মাস ফেলে রাখা হয়েছে। অথচ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আমলাদের সুপারিশকৃত বদলী দ্রুতই হয়ে যাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। ভোট আওয়ামী লীগের দরকার সচিব বা আমলাদের নয়। তাই এখনই সময় সোলেমান খান এর মত সচিবদেরব বদলি জরুরি অন্যথায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন সময়ে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।