দুদক অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনকে এক মাসের সময় দিয়েছে

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৩

বর্তমান খবর,নিজস্ব প্রতিনিধি : মাল্টিমিডিয়া অনিয়ম-অপকর্ম দূর্নীতিবাজ হযরত শাহ্ আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনকে গত ৫ জুন দূনীতি দমন
কমিশন (দুদক ) এর সহকারী পরিচালক(অনু ও তদন্ত) আশিকুর রহমান সেগুন বাগিচা দুদক এর প্রধান কাযালয়ে জিঞ্জাসাবাদের জন্য তলব করেন। এর আগে একই দিন সকাল সারে নয় টায় স্বাক্ষী দিতে দুদকে আসেন ঢাকা উত্তর সিটিকর্পোরেশনের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান।

জিঞ্জাসাবাদ শেষে অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের কোন বক্তব্য না পেলেও প্রকৌশলী মিজানুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন,আমি লিখিত বক্তব্যতে যা বলেছি বিশ্বব্যাংকের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) প্রজেক্টে আমি কোন ভাবেই জড়িত ছিলাম না কাছেই ঐ স্বাক্ষর-সীল কোনটায় আমার না। আমার স্বাক্ষর-সীল জালিয়াতি করা হয়েছে। আমি দুদক কর্মকর্তার কাছেও একই কথা বলেছি অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন আমার স্বাক্ষর-সীল-পদবী জালিয়াতি করেছেন। অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন দুদকের কাছে এক মাসের সময় চাইলে-দুদক ময়েজ উদ্দিনকে এক মাসের সময় দিয়েছে। সময় দেওয়ার বিষয়টি দুদক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

বিশ্বব্যাংকের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) এর চার কোটি টাকা বরাদ্দ পায় হযরত শাহ্আলী মহিলা কলেজ। এই প্রোজেক্টের এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ্য টাকা উত্তলোন করতে ময়েজ উদ্দিন ঢাকা উত্তর সিটিকর্পোরেশনের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেল, মোঃ মিজানুর রহমানের সিল-স্বাক্ষর-পদবী জালিয়াতি করে। অথচ প্রকৌশলী মিজানুর রহমান সি ই ডি পি প্রজেক্টের সাথে কোন ভাবেই যুক্ত ছিলেন না। এবং তিনি জানতেনও না নাম-স্বাক্ষর-সিল-পদবী জালিয়াতি করা হয়েছে। প্রতিবেদকের কাছ থেকে জেনে তিনি অবাক হন। ঘটনা যখন জানাজানি হয় তখন কলেজের গভনিং বডির সভাপতির দ্বায়িত্বে ছিলেন প্রফেসর ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসাইন,তিনি অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের নানা দূর্নীতি অপকর্মের সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে গভনিং বডির মিটিং এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনকে ছুটিতে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন কলেজ পরিচালনার স্বার্থে নিয়ম অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দ্বায়িত্ব দিয়েছিলেন মোঃ ফকরুল ইসলামকে।

সিইডিপি প্রজেক্টে যুক্ত ও ড.এম এ মুকিম সদস্য আইজিডি ম্যানেজমেন্ট টিম ও সহকারী অধ্যাপক ইসলাম শিক্ষা হযরত শাহ্ আলী মহিলা কলেজ। মোঃ কছিম উদ্দিন, ডিপুটি আইডিজিএম, আইডিজি ম্যানেজমেন্ট টিম ও সহকারী অধ্যাপক, হযরত শাহ্ আলী মহিলা কলেজ এবং এম এম শফিকুল ইসলাম, সদস্য আইডিজি ম্যানেজমেন্ট টিম ও সহকারী অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা,হযরত শাহ্ আলী মহিলা কলেজ। এই তিনজন লিখিত জানান তারা কেউ প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে দেখেননি।

এছারাও তিনজনই সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ অনেক শিক্ষক এবং এই প্রতিবেদকের সামনে স্বীকার করেন তারা কখনো প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে দেখেননি। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ফকরুল ইসলামের কাছে প্রকৌশলী মিজানুর রহমান তার স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে লিখিত ভাবে জানান ও জালিয়াতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এবং লিখিত পত্রে উল্লেখ করেন সিইডিপি প্রজেক্টের টাকা উত্তলোনে ব্যাবহৃত স্বাক্ষর তার নই-মর্মে পত্রে নিজের প্রতি স্বাক্ষর প্রদান করেন।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য থাকায় মোঃ শাহাদাৎ হোসেন সহকারী অধ্যাপক-কে মামলা পরিচালনা করার ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত প্রত্যয়ন দেন। সহকারী অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন মামলা করতে গেলে কোর্ট দুদকে আভিযোগ করতে বলেন। শাহাদাৎ হোসেনের অভিযোগের পেক্ষিতে বর্তমানে প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি সহ অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের অনিয়ম-অপকর্ম-দূর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করছেন দুদক এর সহকারী পরিচালক(অনু ও তদন্ত) আশিকুর রহমান।

ইন্জিনিয়ার আনিসুর রহমান,অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের বিশ্বব্যাংকের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) সহ বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত তাকে
জিঞ্জাসাবাদ করলে আরো অজানা অনেক তথ্য বেড়িয়ে আসবে। বিশ্বব্যাংকের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে। স্বাক্ষর জালিয়াতি ধরা পরার পর পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে লিখিত ভাবে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া অনুরোধ করা হয় কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

শুধু প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয় না। বিগত দুই বছরের বেশী সময় অসংখ বার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের অনিয়ম-অপকর্ম-দূর্নীতি,প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হকের স্বাক্ষর জালিয়াতি,সাবেক অধ্যক্ষ শিরিন আক্তারের স্বাক্ষর জালিয়াতি”র তদন্তের মাধ্যমে প্রতিকার চেয়ে একাধিক আবেদন করা হলেও কোন অদৃশ্য কারনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজ পযন্ত কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেন নাই, নেন নাই কোন পদক্ষেপ। উল্টো সহকারী অধ্যাপক সমাজ বিজ্ঞান রানা ফেরদৌস রত্না প্রত্যক্ষ সহায়তায় সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু ডিও লেটারে অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের আঞ্ঝাবহ মোঃ মুরাদ হোসেন
কে হযরত শাহ্ আলী মহিলা কলেজের গভনিং বডির সভাপতি করে দেন।

কলেজের সভাপতি এখন অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের সকল হুকুম তামিল করেন। আর অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের সকল সুবিধা করে দেওয়ার বিনিময়ে সহকারী অধ্যাপক সমাজ বিজ্ঞান রানা ফেরদৌস রত্না হয়ে যান উপাধ্যক্ষ। স্বামীর ক্ষমতায় ক্ষমতাবান উপাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক সমাজ বিজ্ঞান রানা ফেরদৌস রত্না এখন আর কলেজের কাউকে তোয়াক্কা করেন না।

গভনিং বডির সভাপতি হওয়া মুরাদ হোসেন নিজেই বলেন কেউ আমার কথা শোনেনা ।রানা ফেরদৌস রত্না, উপাধ্যক্ষ হবার পর নিয়মিত কলেজে আসেন না যেদিন কলেজে আসেন সেদিন আসেন দুপুরে। কলেজে এসে অধ্যক্ষর রুমে বসে দুপুরের খাবার খেয়ে চলে যান তার নামে অনেক অভিযোগ। অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেন না কেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার ক্ষমতা আমার নাই। গভনিং বডির সদস্য সাইফুল ইসলাম আকাশ এমপির লোক হওয়ায় তার কথা মতো আমাকে চলতে হয়।

গভনিং বডির সভাপতিকে নিয়ন্ত্রণ করেন অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন আর অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনকে নিয়ন্ত্রণ করেন উপাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক সমাজ বিজ্ঞান রানা ফেরদৌস রত্না। সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টুর অফিসের একটি সূত্র জানায় উপাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক সমাজ বিজ্ঞান রানা ফেরদৌস রত্না সংসদ সদস্য আগা
খান মিন্টুকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার স্বামীর মাধ্যমে নমিনেশন পাইয়ে দেবেন।