বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১০:৪৫ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২৫

বর্তমান খবর,রংপুর ব্যুরো:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় কয়েকটি মামলার আসামি প্রক্টর অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ৭ মে বুধবার রাত ২টার দিকে নগরীর গণেশপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

নগরীর তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম সরদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোক্তারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৬ মে মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ মামলার বাদী হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হারুন অর রশিদ। এতে আসামি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৮০-১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ৪৩ নম্বর আসামি হিসেবে রাফিউল হাসানের নাম রয়েছে।

পুলিশ সুত্রে জানা যায়,সহকারী রেজিস্টার রাফিউল হাসান রাসেলের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মামলাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় কয়েকটি মামলা আছে। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। গত বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়–য়া, সাধারণ স¤পাদক মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক মাসুদুল হাসানসহ ছাত্রলীগের ৩৬ জনকে ১ থেকে ৩৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

যুবলীগের রংপুর জেলা সাধারণ স¤পাদক মেহেদী হাসান সিদ্দিকীসহ বহিরাগত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ১৩ জন আসামি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ স¤পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল এবং গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তারা আত্মগোপনে আছেন। এছাড়া আসামির তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক উপ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন, অতিরিক্ত উপ কমিশনার শাহানুর আলম পাটোয়ারী, সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার আল ইমরান হোসেন, আরিফুজ্জামান, তাজহাট থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভ‚তিভ‚ষণ রায়, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও আমির আলীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সুজন চন্দ্র রায় ও আমির আলী কারাগারে রয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ ও ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত করেন। ১১জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদের ওপর আক্রমণ করা হয়।

১৬ জুলাই পুলিশ ও বহিরাগত অজ্ঞাতনামা ৮০ থেকে ১০০ জন আসামি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি, লাঠিসোঁটা, রড, ছুরি, রামদা, কিরিচসহ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা করেন। পুলিশও নিরস্ত্র ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করে।

নগরীর তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম সরদার বলেন, কোটা আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।