সড়ক আইনে ‘মামলা’, আসামি ধরতে হাইওয়ে পুলিশের ‘গড়িমসি’

প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২৫

বর্তমান খবর,কাশিয়ানী(গোপালগঞ্জ)প্রতিনিধনি:

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে উল্টোপথে ও বেপরোয়া গতির ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেটকার দুমড়ে-মুচড়ে চালকসহ চারজন আহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে।

গাড়ির মালিক হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে গত ২৯ এপ্রিল কাশিয়ানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি করা হয়েছে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় চালক দিহান শেখকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। দিহান কাশিয়ানী উপজেলার জঙ্গলমুকুন্দপুর গ্রামের ইউপি সদস্য জামাল শেখের ছেলে।

গত ২৭ এপ্রিল উপজেলার পিংগলিয়া এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ী সম্পর্কে তথ্য জানতে ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানায় যোগাযোগ করা হলে কোন সহযোগিতা পাইনি বলে অভিযোগ মামলার বাদীর। ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও নেয়নি হাইওয়ে পুলিশ। পরে কাশিয়ানী থানায় যোগাযোগ করলে মামলা নেয় থানা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে হাইওয়ে পুলিশকে।

এদিকে, আসামি ধরতে হাইওয়ে পুলিশের গড়িমসি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাদী হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আসামি ধরা নিয়ে গড়িমসি করছে হাইওয়ে পুলিশ। আসামি এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও ধরছে না। মামলা তদন্ত কর্মকর্তার গড়িমসি ও বিমাতাসুলভ আচরণে আমি খুবই হতাশ।’

তবে হাইওয়ে থানা পুলিশ বলছে, ‘তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন তদন্ত চলছে। মামলার সাথে প্রকৃত ঘটনার কিছুটা অসঙ্গতি রয়েছে।’

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল বেলা ১১ টার দিকে চালক গাড়ি চালিয়ে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ যাওয়ার পথে কাশিয়ানী উপজেলার পিংগলিয়া এনার্জি পার্ক তেলের পাম্পের সামনে পৌঁছালে উল্টোপথে আসা বেপরোয়া গতির ড্রাম ট্রাকটি প্রাইভেটকারকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং গাড়িতে থাকা তিন যাত্রীসহ চালক আহত হন। স্থানীয় হাইওয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। তাদের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গুরুতর আহত রাসেল বর্তমান ঢাকার শ্যামলী স্পেশালাইজড প্রাইভেট হাসপাতাল ও শাকিল শ্যামলীর ইবনেসিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আসামি ধরার বিষয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রোমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুনলাম বাদী পক্ষের সাথে আপোষের জন্য আসামি পক্ষ যোগাযোগ করছেন। তবে উপরের নির্দেশনা ছাড়া তো আমি কিছু করতে পারি না। গাড়ির মালিকানা-নাম ঠিকানা যাচাই করছি। তদন্ত চলমান।’

ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, ‘মামলায় চালক হিসেবে দিহানকে দেখানো হয়েছে। কিন্তু চালক দিহান না। আমরা চালকের নাম পেয়েছি। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য থানায় পাঠিয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

কাশিয়ানী থানার ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘গাড়ীর মালিক হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলা তদন্ত করে ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ইনচার্জ ব্যবস্থা নিবেন।’