যশোর সংবাদদাতা || সম্প্রতি একটানা বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে তলিয়ে গেছে যশোরের নিম্নাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। মনিরামপুর উপজেলার অর্ধশত স্কুল বন্যা কবলিত হয়ে শ্রেণি কক্ষ ও খেলার মাঠ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ও চারপাশে প্রায় কোমর পর্যন্ত পানি। শুধু তাই নয়, গ্রামীণ সংযোগ সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে দুভোর্গ বেড়েছে। ফলে বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বেশির ভাগ স্কুল খোলা থাকায় পানিতে ভিজে স্কুলে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে স্কুল ড্রেসসহ শিক্ষা উপকরণ পানিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বিপাকে। বিদ্যালয়ের মাঠে পানি থাকায় খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
উপজেলার নেহালপুর, কুলটিয়া, মনোহরপুর ও দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় ৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় হাটগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিএইচএমএস নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও হাটগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজ, কুলটিয়া বালিকা বিদ্যালয়, বাজে কুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মশিয়াহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ ৮টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতা রানী বলেন, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে স্কুল মাঠে পানি জমে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। লখাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক উৎপল বিশ্বাস জানান, প্রায় দেড় মাস ধরে স্কুলের মাঠে পানি জমে রয়েছে। বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ভবনের নিচতলায় শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে যাওয়া শ্রেণি কার্যক্রম দ্বিতলায় চালাতে হচ্ছে। হাটগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সনজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে লিখিতভাবে অব্যাহতি করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম এমন পাঁচটি বিদ্যালয়ের লিখিত আবেদন পেয়েছি। শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষকদের পাঠদান করাতে বলা হয়েছে।