বর্তমান খবর,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: পূর্বনির্ধারিত মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকটি ওয়াজ মাহফিলে অংশগ্রহণের জন্য এসেছিলেন জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার মুফতি আমির হামজা। পরে মাহফিলে বয়ান না করেই মৌলভীবাজার ত্যাগ করেছেন মুফতি আমির হামজা। তবে কেন-কি কারণে পূর্বনির্ধারিত মাহফিলে এলেও বয়ান করতে পারেননি তিনি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলেছেন মুফতি আমির হামজা।
বুধবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ইং,সকালে সাড়ে নয়টার সময় ইসলামিক স্কলার মুফতি আমির হামজা মুঠোফোনে বলেন, মৌলভীবাজার জেলার কয়েকটি উপজেলায় আমার পূর্বনির্ধারিত মাহফিলে বয়ান করার কথা ছিল। গত ২৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় একটি মাহফিল ছিল। সেখানে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় আমি মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারিনি।
ওইদিন রাতে জেলার বড়লেখা উপজেলায় পরগনাহী দৌলতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় দুদিন ব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে আমার বয়ান রাখার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় শুধু আমি বয়ান রাখতে পারিনি। অবশ্য এই ওয়াজ মাহফিলে অন্য বক্তরা বয়ান করতে পেরেছেন। এছাড়া পরদিন মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও আমি সেখানে বয়ান রাখতে পারিনি।
মুফতি আমির হামজা তিনি আরও বলেন, যেহেতু তিনটি মাহফিলে আমার বক্তব্য রাখার বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি মিলেনি তাই প্রশাসনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমি জেলার কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায় আরও দুটি মাহফিলে অংশ না নিয়ে মৌলভীবাজার থেকে চলে এসেছি।
আমির হামজা আরও বলেন, আমি বয়ান করব জেনে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে মাহফিলে এসেছিলেন। তারা হয়ত মন খারাপ করে ফিরে গেছেন। তাদের সবার প্রতি আমার সালাম। পরবর্তীতে আবার কোনো মাহফিলে তাদের সঙ্গে দেখা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মৌলভীবাজার জেলা বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল সূত্র জানা যায়, ইসলামিক স্কলার মুফতি আমির হামজা তিনদিনের সফরে গত সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজারে আসেন। ওইদিন জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় একটি মাহফিলে তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে বয়ান করার কথা ছিল। কিন্তু ওই মাহফিলে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় মুফতি আমির হামজা বয়ান করতে পারেননি। ওইদিন রাতে জেলার বড়লেখা উপজেলায় পরগনাহী দৌলতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার উদ্যোগে দুইদিন ব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই মাহফিলে অন্য বক্তারা বয়ান পেশ করলেও প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় মুফতি আমির হামজা বয়ান করতে পারেননি।
অবশ্য তিনি মাহফিলে মঞ্চে উঠে উপস্থিত হাজারো মুসল্লিদের সান্তনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাত্র ৬-৭ মিনিট স্বাগতম বক্তব্য রেখেই মঞ্চস্থল ত্যাগ করেন। এছাড়া পরদিন মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সুজানগর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত তাফসিরুল কোনআন মাহফিলের সমাপনী দিনে অন্য বক্তারা বয়ান পেশ করলেও মুফতি আমির হামজা বয়ান করতে পারেননি।
যার কারণে ৩১ জানুয়ারি জুড়ী উপজেলার বড়ধামাই (সরকারী পার) মজিদিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও ইসলামী যুব সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কোনআন মাহফিলে এবং ওইদিন রাতে কুলাউড়া উপজেলায় মনসুর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কোনআন মাহফিলে বয়ান না করেই মৌলভীবাজার জেলা ত্যাগ করেছেন মুফতি আমির হামজা।
এ দিকে সুজানগর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ ও পরগনাহী দৌলতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিল কমিটি জানিয়েছে, তাদের আয়োজিত ওয়াজ মাহফিল শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মাহফিলে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নেমেছিল। তাদের আমন্ত্রিত সকল বক্তারাও সুন্দরভাবে বয়ান করতে পেরেছেন। তবে অনিবার্য কারণবশত মুফতি আমির হামজা বয়ান করতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৪ মে ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি টিম আমির হামজাকে গ্রেপ্তার করে তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিনি জেল থেকে মুক্ত পেয়েছেন।